Maoist Attack: ‘পুরা উড় গ্যায়া…রক্তাক্ত শরীরেই হামাগুড়ি,’ দান্তেওয়াড়ায় সবচেয়ে বড় মাওবাদী হামলা! ভয়ংকর ভিডিয়ো

 ছত্তিশগড়ের দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী হামলায় শহিদ হয়ে গিয়েছেন ১০ জওয়ান। সঙ্গে চালকও। মাওবাদীদের পুঁতে রাখা শক্তিশালী IED বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ১১ জনের শরীর। সেই ভয়ংকর হামলার পর মুহূর্তেই ঠিক কী ঘটেছিল? সামনে এল সেই ভিডিয়ো ফুটেজ।  

২৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিয়ো। ভিডিয়ো শেয়ার করেছে সংবাদসংস্থা এএনআই। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, বিস্ফোরণের পরই এক জওয়ান রক্তাক্ত শরীরে কোনওমতে হামাগুড়ি দিয়ে, গড়িয়ে রাস্তার পাশে সরে যাচ্ছেন। ওদিকে বিস্ফোরণের পরই তখন শুরু হয়ে গিয়েছে গুলি। মাওবাদীদের সঙ্গে জওয়ানদের গুলির লড়াই চলে। সেই গোলাগুলির আওয়াজও শোনা যাচ্ছে ভিডিয়োয়। পাশাপাশি একজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘উড় গ্যায়া, পুরা উড় গ্যায়া। পুরো গাড়িটাই উড়ে গিয়েছে।’ যদিও কে বলছে, ভিডিয়ো তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদসংস্থা। এই ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। দেখুন সেই ভিডিয়োটি-

দান্তেওয়াড়ার আরানপুরে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। ওই এলাকায় মাওবাদীদের আনাগোনা বেড়েছে। ফের ঘাঁটি গেড়েছে মাওবাদীরা। গোপন সূত্রে এই খবর পায় ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড। তারপরই ওই এলাকায় খানা তল্লাশিতে যায় জওয়ানদের একটি দল। এলাকা পরিদর্শন করে ফেরার সময়ই মাওবাদী হামলার শিকার হয় ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের গাড়ি। যে রাস্তা দিয়ে ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ডের গাড়ি ফিরবে, সেই রাস্তাতেই পোঁতা ছিল শক্তিশালী IED। যা ফেটে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় রাস্তায় বিশাল গর্ত হয়ে যায়। প্রায় ১০ ফিট গভীর গর্ত। দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়ি। পড়ে থাকে শুধু গাড়ির খোলনলচেটুকু। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান চালক। ওদিকে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান গাড়িতে থাকা ১০ জওয়ান। 

উল্লেখ্য, বিগত ২ বছরে এতবড় মাওবাদী হামলা ঘটেনি। বাস্তার রেঞ্জের আইজি সুন্দররাজ পি জানিয়েছেন, গত দু বছরে রাজ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর মাওবাদীদের এটিই সম্ভবত সবচেয়ে বড় হামলা। নকশালরা আনুমানিক ৪০ কেজি বিস্ফোরক উপাদান ধারণকারী একটি ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) ব্যবহার করে বিস্ফোরণটি ঘটিয়েছে। রাজ্য পুলিসের ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি)-এর একটি দল নকশাল বিরোধী অভিযানে যাওয়ার সময় দুপুর ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে আরানপুর থানা এলাকায় আরানপুর ও সামেলি গ্রামের মাঝে  মারাত্মক হামলাটি ঘটে। যেখানে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়, সেটি রাজ্যের রাজধানী রায়পুর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দূরে। একটি মাল্টি ইউটিলিটি ভেহিক্যল বা MUV করে যাচ্ছিলেন ১০ জওয়ান। বিস্ফোরণের পর এলাকায় ব্যাপক অনুসন্ধান অভিযান শুরু হয়েছে।

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল বলেন, ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড-এর জওয়ানদের উপর এই হামলা দুর্ভাগ্যজনক। যারা এই হামলার পিছনে জড়িত, তাদের ছাড়া হবে না। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। হামলায় নিহত বীর জওয়ানের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। তারপরই হুঁশিয়ারি দেন, ‘যুদ্ধ এখন শেষ পর্যায়ে, নকশালদের ছাড়া হবে না।’ অন্যদিকে এই ঘটনায় ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে ফোন করে ঘটনার সম্পর্কে বিশদে খোঁজ নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই বিষয়ে সবরকম সাহায্য করা হবে বলে ছত্তিশগড় সরকারকে আশ্বাসও দিয়েছেন শাহ।

প্রসঙ্গত, এই মাসের শুরুতেই প্রাক্তন গ্রামপ্রধানকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে দান্তেওয়াড়া জেলায় চার মাওবাদীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিস। ধৃত মাওবাদীদের কাছ থেকে ৫টি ৩৮ বোরের তাজা কার্তুজ, দুটি ছুরি, নকশাল সাহিত্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.