বিশ্বকর্মা পুজো একদিন পরে কেন, শাস্ত্রেই রয়েছে এমন নিয়মের কারণ

শারদীয় উৎসবের ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। ইদানীং রাজ্যে গণেশ পুজোর রমরমা হলেও বিশ্বকর্মার আগমনেই তো বাঙালির কাছে উৎসবের আগামনী বার্তা আসে।

আকাশের ঘুড়ির মেলা যেন ছুটির ডাক দেয়। ফি বছর ১৭ সেপ্টেম্বরেই হয় বিশ্বকর্মা পুজো। এবার সেটা ১৮ সেপ্টেম্বর। এটা খুব হলেও একেবারেই নতুন কিছু নয়। আর এই তারিখ বদলের পিছনে রয়েছে সনাতন ধর্মের নিয়ম ও পঞ্জিকা। আসলে অন্য দেবদেবীর পুজো তিথি মেনে হলেও দেবশিল্পী বিশ্বকর্মার পুজো তারিখ মেনে করাই রীতি। আর সেটা হচ্ছে ভাদ্র মাসের শেষ দিন বা সংক্রান্তিতে।

আমার জানি বিদ্যার দেবী সরস্বতী থেকে অর্থের দেবী লক্ষ্মী, শক্তির দেবী দুর্গা-কালী সবার পুজোরই কোনও বাঁধাধরা তারিখ নেই। শিব‌, গণেশের পুজোয় তিথি মেনে। কিন্তু শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মার পুজো মানেই ১৭ সেপ্টেম্বর।

আসলে সনাতন ধর্মে সব দেব-দেবীরই পুজোর তিথি স্থির হয় চান্দ্র পঞ্জিকা অনুসরণ করে। কিন্তু বিশ্বকর্মার পুজোর তিথি স্থির হয় সূর্যের গতিপ্রকৃতির উপর ভিত্তি করে। যখন সূর্য সিংহ রাশি থেকে কন্যা রাশিতে গমন করে, তখনই সময় উত্তরায়ণের হয়। এই সময়ে দেবতারা নাকি নিদ্রা থেকে জেগে ওঠেন। আর এই সময়েই শাস্ত্র মতে বিশ্বকর্মার পুজোর আয়োজন বিধেয়।

আরও একটু স্পষ্ট করে বলতে হলে, বিশ্বকর্মার পুজোর দিন ভাদ্র মাসের শেষ তারিখে নির্ধারিত। এই ভাদ্র সংক্রান্তির আগে বাংলা পঞ্জিকায় পাঁচটি মাস। এই পাঁচটি মাসের দিন সংখ্যাও মোটামুটি ১৫৬। এই নিয়মে বিশ্বকর্মা পুজোর যে বাংলা পঞ্জিকা মতে তারিখটি বেরোয়, তা ইংরেজি ক্যালেন্ডারের ১৭ সেপ্টেম্বর হয়। তবে ব্যতিক্রম হয় কোনও বছরে ভাদ্রের আগের পাঁচ মাসের মধ্যে কোনওটা যদি ২৯ বা ৩২ দিনের হয়। যেমন এবার হয়েছে। এমন হলেই বিশ্বকর্মা পুজোর দিন পিছিয়ে যায় বা এগিয়ে আসে। তবে তা খুবই কম ঘটে। এবার ভাদ্র সংক্রান্তির আগে পাঁচ মাসের মোট দিনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৭-র বদলে ১৮ সেপ্টেম্বর উদযাপিত হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.