গত কয়েক দশক ধরে পরিবেশ দূষণ রোধের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে বিশ্বের প্রতিটি দেশ। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। অবিলম্বে প্রতিটি দেশকে দূষণ ঠেকাতে আরও তৎপর হতে হবে। নাহলে আগামী কয়েক দশকের মধ্যে অকালমৃত্যু হবে লক্ষ লক্ষ মানুষের। ৭০ টি দেশের মোট ২৫০ জন বিজ্ঞানী এই মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়াতেই অকালমৃত্যু হবে সবচেয়ে বেশি।
বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে মানুষের মৃত্যুর একটি বড় কারণ হবে মিষ্টি জলের দূষণ। ওই সময় পুরুষ ও নারী, উভয়ের প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাবে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশও ব্যাহত হবে।
তবে বিজ্ঞানীরা এখনই আশা ছাড়তে রাজি নন। তাঁরা বলেছেন, দূষণজনিত বিপদের মোকাবিলা করার মতো বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও অর্থ বিভিন্ন দেশের আছে। তবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। সেই দায়িত্ব বর্তাচ্ছে মূলত নেতা ও শিল্পপতিদের ওপরে। অভিযোগ, তাঁরা এখনও পুরানো, বাতিল হয়ে যাওয়া পদ্ধতিতেই দূষণ ঠেকানোর চেষ্টা করছেন।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ সংক্রান্ত সম্মেলনে ১৭০ টি দেশের প্রতিনিধি যোগ দেন। তাঁদের আলোচ্যসূচিতে ছিল খাদ্যদ্রব্যের অপচয় রোধ, বিদ্যুৎ চালিত গাড়ির ব্যবহারে উৎসাহ দেওয়া এবং সমুদ্রে দূষণ ঠেকানোর ব্যবস্থা নেওয়া। সম্মেলনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতিটি দেশ যদি মোট জাতীয় উৎপাদনের মাত্র দুই শতাংশ পরিবেশের উন্নয়নে ব্যয় করে, তাহলে দীর্ঘস্থায়ী বিকাশে সুবিধা হবে।
বিজ্ঞানীদের দাবি, অবিলম্বে অ্যাকশন না নিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। ২০১৫ সালে প্যারিস ক্লাইমেট এগ্রিমেন্টে যে লক্ষমাত্রা স্থির করা হয়েছিল, সেখানে পৌঁছানো হবে অসম্ভব।
খাদ্যের অপচয় রোধ সম্পর্কে বলা হয়েছে, মাংস কম খেলে খাবার নষ্ট হওয়ার প্রবণতা কমবে। ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীর লোকসংখ্যা হবে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি। সেজন্য খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে ৫০ শতাংশ।
ভারতে পরিবেশ দূষণ রোধে কী করা উচিত, তাও বলা হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে। তাতে আছে, ভারতীয় সমাজে অসাম্য কমানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে। বিশেষত উন্নয়নশীল শহরগুলিতেই এজন্য বেশি করে উদ্যোগ নেওয়া দরকার। একইসঙ্গে গ্রামাঞ্চলে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও আরও বিনিয়োগ করতে হবে।