Parliament: ‘অসংসদীয় শব্দ’ ঘিরে বিতর্কের আবহেই সংসদে শৃঙ্খলা ফেরাতে নয়া আচরণবিধি


বাদল অধিবেশনের আগে চালু হওয়া অসংসদীয় শব্দের নতুন ফর্দ এখনও ভাল করে নাকি মুখস্থ হয়নি অনেক সাংসদেরই। তার আগেই এ বার লোকসভা-রাজ্যসভার বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে নতুন আচরণবিধি চালু হচ্ছে বলে সংসদ সচিবালয়ের একটি সূত্রের খবর। আগামী শীতকালীন অধিবেশন থেকেই ওই নয়া বিধি চালু হতে পারে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।

নয়া আচরণবিধিতে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে অধিবেশন চলাকালীন ওয়েলে নেমে পোস্টার-প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ প্রদর্শন বন্ধের বিষয়টিতে। সংসদের গরিমা এবং মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি সাংসদেরা যাতে নিজেদের মত যথাযথ ভাবে তুলে ধরতে পারেন, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকার এবং বিরোধী পক্ষের সাংসদের মতামত নিয়ে ওই আচরণবিধির খসড়া তৈরি হয়েছে। অধিবেশন চলাকালীন সপ্তাহে অন্তত এক দিন বিভিন্ন বিষয়ে সাংসদদের ‘সংক্ষিপ্ত বক্তব্য’ পেশের সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে তাতে।

বাদল অধিবেশনে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখানোর ‘অপরাধে’ লোকসভার চার এবং রাজ্যসভার ১৯ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। বস্তুত, অধিবেশনে বিক্ষোভ-বিশৃঙ্খলার কারণে সংসদের দুই কক্ষের প্রতিটি অধিবেশনেই বহু কাজের সময় নষ্ট হয়েছে। রাজ্যসভা সচিবালয়ের পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ বছরে মাত্র দু’টি অধিবেশনে নির্ধারিত সময়ের ‘পূর্ণ সদ্ব্যবহার’ করতে পেরেছে সংসদের উচ্চকক্ষ।

প্রসঙ্গত, সংসদে অশান্তি ঠেকাতে গত বাদল অধিবেশনে সাংসদদের ‘মুখে লাগাম পরাতে’ সক্রিয় হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। ‘অসংসদীয় শব্দের’ নয়া তালিকা প্রকাশ করে অধিবেশনে সেগুলির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিল, ‘লজ্জাজনক’, ‘নির্যাতন’, ‘বিশ্বাসঘাতকতা’, ‘নাটক’, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’, ‘অযোগ্য’ ‘ভণ্ডামি’র মতো বেশ কিছু ‘আপাত নিরীহ’ শব্দ। সংসদের অধিবেশনে ‘নৈরাজ্যবাদী’, ‘শকুনি’, ‘স্বৈরাচারী’, ‘খলিস্তানি’, ‘বিনাশপুরুষ’, ‘জয়চাঁদ’ (পৃথ্বীরাজ চৌহানের বিরুদ্ধে মহম্মদ ঘোরিকে মদত দেওয়া কনৌজের রাজা), ‘তানাশাহি’-র মতো শব্দের প্রয়োগও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

অসংসদীয় শব্দ’ ঘিরে বিতর্কের আবহেই বাদল অধিবেশনের মুখে আরও একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করে রাজ্যসভা সচিবালয় জানিয়েছিল সংসদ চত্বরে আর ধর্না, বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যাবে না। অনশন, অবস্থান এমনকি, ধর্মীয় অনুষ্ঠান করার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল ওই নির্দেশিকায়। যদিও তা উপেক্ষা করেই সংসদ চত্বরে গাঁধীমূর্তির নীচে টানা অবস্থান-বিক্ষোভ করেছিলেন সাসপেন্ডেড বিরোধী সাংসদেরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.