গরু পাচারের তদন্তে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই মামলাতেই বীরভূমের প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তারা। এর মধ্যেই, কয়লার পরে এ বার গরু পাচার কাণ্ডে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ সিআইডি-ও।
পুলিশি সূত্রের খবর, সিআইডি-র এক স্পেশাল সুপারের নেতৃত্বে উত্তর ২৪ পরগনার মাটিয়া এবং মুর্শিদাবাদের সুতি থানার দু’টি পুরনো গরু পাচার মামলার তদন্ত নতুন করে শুরু করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ওই দু’টি মামলায় স্থানীয় পুলিশ গরু ভর্তি লরি ধরে এবং বেশ কয়েক জন লরিচালক ও খালাসিকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছিল। তদন্ত শেষে চার্জশিটও পেশ করা হয় আদালতে। চলতি মাসের গোড়ায় ফের ওই দু’টি মামলার তদন্ত করতে চেয়ে পুলিশ স্থানীয় আদালতে আবেদন করলে তা মঞ্জুর হয়। তার পরেই স্থানীয় দুই থানা সুতি এবং মাটিয়া থেকে তদন্তভার নিজেদের হাতে নিয়ে পুনরায় তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।
জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৭ সালের মামলায় জানা গিয়েছিল, মুর্শিদাবাদ-বীরভূম সীমানা ঘেঁষা মুরারই থেকে গরুগুলিকে হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হত মুর্শিদাবাদে। পরে সেখান থেকে সীমান্ত পার করিয়ে বাংলাদেশে পাচার করা হত। অন্য একটি রুটের কথাও জানা গিয়েছে। সেটি হল বীরভূমের নলহাটির ভদ্রপুর, মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম হয়ে বাংলাদেশ। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, বীরভূমের ইলামবাজার থেকে গাড়িতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে বনগাঁ-বসিরহাট সীমান্ত টপকে বাংলাদেশে গরু পাচার হত। পুলিশ জানিয়েছে, তখন তদন্তে উঠে এসেছিল, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ থেকে গরু আনা হয় ইলামবাজারের হাটে। তার পরে প্রভাবশালীদের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ট করে দেওয়া পথে তা পাচার হয়ে যেত বাংলাদেশে। বেশ কয়েক জন প্রভাবশালীর নাম উঠেও এসেছিল তদন্তে। সীমান্তে পাহারায় থাকা জওয়ানদের ভূমিকাও ছিল আতশ কাচের তলায়। সব কিছুই নতুন করে খতিয়ে দেখার কাজ চলছে বলে সিআইডি সূত্রের খবর।
কয়লা পাচার মামলায় সিআইডি বসিরহাটের ব্যবসায়ী আব্দুল বারিক বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছিল। গরু পাচার মামলায় সেই আব্দুলের নাম ছিল সিবিআই ও ইডি-র খাতায়। তার বাড়িতে তল্লাশিও চালিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।