পুজোর দখল প্রায় নিয়ে ফেলেছিল বিজেপি। চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছিল অমিত শাহকে এনে ফিতে কাটানো হবে দিদির পাড়ার পুজোয়। কিন্তু শেষমেশ কালীঘাট সঙ্ঘশ্রীর পুজোয় গেরুয়া অনুপ্রবেশ ঠেকিয়ে দিয়েছে তৃণমূল। আসরে নেমেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার ঠাকুরের থিমে ‘বিজেপি ছোঁয়া’ থাকায় থিম শিল্পীকেই সরিয়ে দিল সঙ্ঘশ্রী।
গত বছর ডিসেম্বরেই কমিটির তরফে জানানো হয়েছিল সঙ্ঘশ্রীর ৭৪তম বর্ষে থিম হবে ‘কাটাকুটির খেলা।’ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল থিম করবেন শিল্পী প্রদীপ্ত কর্মকার। সেই মতো মৃৎশিল্পী পরিমল পালকে ঠাকুরের ডিজাইন করে অর্ডার দিয়ে দিয়েছিলেন প্রদীপ্ত। আচমকাই কয়েকদিন আগে ক্লাব কর্তারা প্রদীপ্তকে বলেন, ঠাকুরের আদল বদলাতে হবে। পদ্মফুলের উপর কিছুতেই মা দুর্গাকে বসানো যাবে না।
বাজেট কমেছে সঙ্ঘশ্রীর। কেউ কেউ বলছেন, বিজেপি নিয়ন্ত্রণ করলে ৫০ লক্ষ টাকার বেশি বাজেট হতো। সেই মতো করেই সব ভাবা হয়েছিল। কিন্তু নিয়ন্ত্রক বদল হওয়ায় বাজেটও প্রায় পাঁচগুণ কমে গিয়েছে। শিল্পীকে সেই ব্যাপারটিও বলা হয়।
প্রদীপ্ত জানিয়েছেন, বাজেট কমে যাওয়ার কারণেই তিনি সরে এসেছেন। যদিও সঙ্ঘশ্রীর সম্পাদক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শিল্পীকে বলা হয়েছিল ডিজাইন পাল্টাতে। পদ্মফুলে ঠাকুরকে দাঁড় করানো যাবে না। রাজি না হওয়াতেই থিম মেকার বদলাতে হয়েছে। সঙ্ঘশ্রীর নতুন থিম মেকার সাত্যকি সুর। ‘কাটাকুটির খেলা’র বদলে নতুন থিম ‘সবার উপরে মানুষ সত্য।’
পর্যবেক্ষকদের মতে, বিজেপি যদি কালীঘাটের পুজোর দখল নিয়ে অমিত শাহকে দিয়ে উদ্বোধন করাতো, তাহলে তা নিঃসন্দেহে তৃণমূলের কাছে অস্বস্তির ব্যাপার হয়ে দাঁড়াত। কিন্তু তা হচ্ছে না। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল তাই এখন চাইছে কোনও ভাবে যাতে বিজেপি ছোঁয়া না থাকে। রাজ্যের এক বিজেপি নেতা কটাক্ষ করে বলেন, “পুজোতে তো এমনিতেই পদ্মফুল লাগে। তৃণমূল কি নতুন শাস্ত্র লিখবে? পদ্মফুলের বদলে জোড়া ফুল দেবে? কে জানে! দিদির রাজ্যে কিছুই অসম্ভব নয়।”