হিন্দুত্বের প্রতীক হিসেবে গোটা বিশ্বে পরিচিত হবে অযোধ্যার রাম মন্দির। এমনটাই মনে করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রবিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নারায়ণ সিং বলেন, অযোধ্যার রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র হিন্দুত্বের প্রতীক হিসাবে আবির্ভূত হবে। অযোধ্যায় রাম মন্দির এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে এটি ভ্যাটিকান সিটি এবং মক্কার মতো একটি ধর্মের প্রতীক হয়ে উঠতে পারে।”
২০২৩ সালের শেষ নাগাদ অযোধ্যার রাম মন্দিরটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। মন্দিরের নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। যদিও পুরো কমপ্লেক্সটি তৈরি হতে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় লেগে যাবে। ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ, মন্দিরের নিচের তলার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মন্দিরের গর্ভগৃহ হবে নিচের তলায়। পাটনার মহাবীর মন্দির শনিবার রাম মন্দির ট্রাস্টের জন্য ২ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। এটি ছিল তাদের অনুদানের দ্বিতীয় কিস্তি।
মন্দিরের ভিত্তি নির্মাণের প্রথম ধাপের কাজ শেষ হয় সেপ্টেম্বরে। দ্বিতীয়টি কর্ণাটকের গ্রানাইট এবং মির্জাপুরের বেলেপাথর দিয়ে তৈরি হবে। রাজস্থানের বংশী পাহাড়পুর থেকে পাথরের স্ল্যাব তৈরির কাজ চলছে। রাম মন্দির নির্মাণের জন্য এক লাখ ঘনফুট খোদাই করা স্ল্যাব প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে।
গত বছরের ৫ অগস্ট থেকে মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে অযোধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরের শিলান্যাস করেন। ২০২৩-এর ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ শেষ হবে বলে জানা গিয়েছে। ১৮ হাজার ৫০০ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে ভিত। ১২ মিটার গভীর পর্যন্ত খোঁড়া হয়েছে। সেই গভীরতা পূরণ করা হয়েছে কংক্রিটে। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এ ভাবেই মজবুত করা হচ্ছে রাম মন্দিরের ভিত। সেই কাজ শেষ করা হয়েছে রেকর্ড সময়ে।
জানা গিয়েছে, মন্দিরের গর্ভগৃহ যে জায়গায় তৈরি করা হবে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে বালি, পাথর পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। ফলে কাজে বাধা আসে। গত মার্চ মাসে তাই নির্মাণকাজ শুরু করার চেষ্টা হলেও, তা করা যায়নি। তবে দেরি হলেও ভিত যাতে পোক্ত হয় সে দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। ভিত্তিপ্রস্তর পোক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পাথরের গুঁড়ো, বিভিন্ন ধরনের পাথর, সিমেন্ট ও জলের মিশ্রণ।
যে কংক্রিটের লেয়ারে সেই গভীরতা পূরণ করা হয়েছে তাকে বলা হচ্ছে ‘ইঞ্জিনিয়ারড ফিল।’ এরকম ৪৮টি লেয়ার সাজানো হচ্ছে পরপর। প্রত্যেকটি লেয়ার ২৫০ মিলিমিটার পুরু। অর্থাৎ সব মিলিয়ে মোট লেয়ার হবে ৪৪.৫ লক্ষ ঘন ফুট। নির্মাণ যাতে পোক্ত হয়, তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রুর্কির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটকে। ভূমিকম্পেও যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ পরীক্ষা করেছে রুর্কির এই ইনস্টিটিউট।