একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে দিদি কতবার ভিজেছেন ইয়ত্তা নেই। শ্রাবণের শুরু, বৃষ্টি হবে। সেটাই চেনা ছবি। আকাশভাঙা বৃষ্টি দেখে দিদি প্রতিবার বলেন, ‘ভগবানের আশীর্ব্বাদ-আল্লাহর দোয়া’।
কিন্তু এ বার?
দক্ষিণ বঙ্গে তাপপ্রবাহ চলছেই। ভরা বর্ষার মরসুমেও হাঁসফাঁস করা গরম। হাওড়া, হুগলি, কলকাতার মতো গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির ঘাটতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। এই পরস্থিতিতে কাল রবিবার, ২১ জুলাই কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা নিয়ে কোনও আশার কথা শোনাতে পারল না আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার দুপুরে হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, রবিবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের দু’একটি জায়গায় সামান্য বৃষ্টি হলেও হতে পারে। তবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
হাওয়া অফিস এ-ও জানাচ্ছে, আগামী ২৪ ঘণ্টা অসহ্য গরম থেকে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনাও প্রায় নেই। বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ শনিবারের মতোই থাকার কথা শুনিয়েছে মৌসম ভবন। ফলে গলদঘর্ম হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। রবিবার ধর্মতলা এলাকার তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু আর্দ্রতার কারণে রিয়েল ফিল হবে প্রায় ৩৯-৪০ ডিগ্রি।
প্রায় প্রতিবার একুশের সমাবেশই হয় বৃষ্টিস্নাত। মেঘলা আবহাওয়ার জন্য ধর্মতলায় ঠায় দাঁড়িয়ে বা বসে থেকে কর্মীদেরও অসুবিধা বিশেষ হয় না। কোনও কোনও বার এমনও দেখা গিয়েছে, কাক ভেজা হয়ে বক্তৃতা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েকবছর আগে এমনও দেখা গিয়েছে একুশের সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা করতে করতে বৃষ্টি নামায়, সাউন্ডের লোকজন উঠে দিদির হাতের মাইক্রোফোনে প্লাস্টিক জড়িয়ে দিয়েছে। কারণ কারেন্ট লাগতে পারে।
কিন্তু এ বারের আবহাওয়া চিন্তায় ফেলে দিয়েছে কালীঘাটকে। এমনিতেই ভিড় নিয়ে সংশয়ে শাসকদল। তার উপর যদি বৃষ্টি না হয়, তাহলে ভর দুপুরের কাঠ ফাটা রোদে জনতাকে কী করে এক জায়গায় বসিয়ে রাখা যাবে, তা নিয়েও চিন্তা রয়েছে শাসক শিবিরের। কারণ ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসদের সামনে যেখানে মূল মঞ্চ, সেখান থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত লম্বা রাস্তায় কোথাও ছাউনি নেই। একুশের মঞ্চের উপরেও কোনও ছাউনি থাকে না। ফলে বর্ষীয়াণ নেতা মন্ত্রী থেকে মিমি-নুসরতের মতো সাংসদদেরও গরমে বেজায় কষ্ট হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দলের শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছে, সে কারণেই ভাবা হচ্ছে সকাল সকাল মিটিং শুরু করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শেষ করে ফেলা। এ ছাড়া প্রচুর জল, ওষুধ ও অ্যাম্বুলেন্সেরও ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।