উচ্চমাধ্যমিকের মূল্যায়ন নিয়ে বড় ঘোষণা করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ২০১৯ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষার সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া চারটি বিষয়ের উপর দেওয়া হবে ৪০ শতাংশ গুরুত্ব। বাকি ৬০ শতাংশের হিসেব হবে ক্লাস ইলেভেনের বার্ষিক পরীক্ষা থিওরিতে প্রাপ্ত নম্বরের উপর। সেই সঙ্গে যোগ হবে দ্বাদশ শ্রেণির প্রোজেক্ট ও প্র্যাকটিক্যালের নম্বর।– মোট এই হিসেবে মূল্যায়ন হবে ২০২১ সালের উচ্চমাধ্যমিকের। আজ, শুক্রবার বিকেল চারটেয় শিক্ষা দফতরের তরফে ঘোষণা করা হল এমনটাই।
সহজ কথায় বলতে গেলে, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মূল্যায়ন তিনটি ধাপে নম্বর যোগ করে হবে। এক, ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার চারটি বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর, দুই, ২০২০ সালে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় থিওরিতে পাওয়া সর্বোচ্চ নম্বর, তিন, দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রোজেক্ট বা প্র্যাকটিকালের নম্বর।
এখন মাধ্যমিকে যে কোনও বিষয়ে পাস নম্বর হল ৪০, একাদশের থিওরিতে যে কোনও বিষয়ে পাস নম্বর হল ৬০। কাজেই কোনও ছাত্র পাস মার্কের ওপরে যত নম্বর পাবে তার শতাংশের হিসেব বের করে প্র্যাকটিকালে পাওয়া নম্বর যোগ করে মোট নম্বর ধার্য করা হবে।
আরও সহজ করে বললে, ধরা যাক মাধ্যমিকের মোট নম্বর A, একাদশের থিওরির মোট নম্বর B এবং প্র্যাকটিকালের মোট নম্বর C। তাহলে উচ্চমাধ্যমিকে ছাত্র বা ছাত্রীর মোট নম্বর হবে এই তিনটি যোগ করে অর্থাৎ A+B+C।
এবার ধরা যাক, কোনও ছাত্র বা ছাত্রী মাধ্যমিকের ৪টি বিষয়ে মোট ৪০০ নম্বরের মধ্যে ২০০ নম্বর পেয়েছে, একাদশের বার্ষিক পরীক্ষায় থিওরিতে ৭০ নম্বরের মধ্যে ৫০ পেয়েছে এবং প্র্যাকটিকালে ৪০ নম্বরের মধ্যে ২৮ পেয়েছে, তাহলে তার মূল্যায়ন কীভাবে হবে?
এর জন্য একটা অঙ্ক কষতে হবে। উচ্চমাধ্যমিক পর্ষদ একটা ফর্মুলা দেখিয়েছে সেটা হল—
মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে পাস নম্বর হল ৪০। যদি থিওরি ৭০ নম্বরের হয় তাহলে নম্বর বের করতে হবে ৭০-এর
এর মানে হল মাধ্যমিকে পাস মার্কের ভিত্তিতে একটা মান ধরে নেওয়া হচ্ছে ২৮, এবার যদি কেউ ৪টি বিষয়ে ৪০০ নম্বরের মধ্যে মোট ২০০ পায়, তাহলে তার প্রাপ্ত নম্বর হচ্ছে ২০০/৪০০, মানে মোট নম্বরের মধ্যে যত পেয়েছে, এর সঙ্গে ২৮ নম্বরকে গুণ করতে হবে। অর্থাৎ ২৮*২০০/৪০০=১৪। এখন যদি কেউ ৩০০ পায়, তাহলে প্রাপ্ত নম্বর হবে ২৮*৩০০/৪০০। এইভাবে হিসেব করতে হবে।
আর প্র্যাকটিকালে যদি ৩০ এর মধ্যে ২৮ (C) পায় তাহলে সবমিলিয়ে A+B+C= ১৪+৩০+২৮=৭২।
মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে এবছর মোট ২১ লক্ষ পড়ুয়ার পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করে জুলাই মাসের মধ্যেই এই দুই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।
পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করার আগে এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মতামতও জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদি না হয় তবে কোন পথে মূল্যায়ন এগোবে তাও জানাতে বলা হয়। তার পরই সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। এবার পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের স্বস্তি দিয়ে ঘোষণা করা হল মূল্যায়নের পদ্ধতিও।
পাশাপাশি এদিন জানানো হয়, উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তাঁরা যেন ২০২০ সালের একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট আগামী ২৩ জুনের মধ্যে সংসদে জমা দেন। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ-সহ সমতুল্য অন্য বোর্ডের প্রধানদেরও বলে হয়, তাঁরা যেন তাঁদের বোর্ডের মাধ্যমিকের বিষয়ভিত্তিক ফলাফল পাঠিয়ে দেন সংসদে। তার ওপরে ভিত্তি করেই দ্রুত ফলপ্রকাশ হবে উচ্চমাধ্যমিকের।