বিজেপি-র অন্দরে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের খোঁচা দিতে টুইট করেছিলেন তথাগত রায়। তাতে উল্লেখ ছিল, দলের ঘরছাড়া কর্মীদের অভিযোগ শুনে তিনি অসহায় বোধ করছেন। কালক্ষেপ না করে জবাব দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কোনও রাজনৈতিক রং না দেখে ঘরছাড়াদের পাশে দাঁড়ানো এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে চেয়েছেন ঘরছাড়াদের তালিকা।
তাতে কি কিছুটা বিপাকে তথাগত? কারণ, তাঁর কাছে তেমন কোনও তালিকা নেই। তিনি তালিকা তৈরি করবেন জানিয়ে আপাতত জবাব দিয়েছেন চন্দ্রিমাকে। একই সঙ্গে লিখেছেন, ‘আমি খুবই কম নামের তালিকা দিতে পারব। আপনাদের হাতে পুলিশ এবং গোয়েন্দা শাখা রয়েছে। অনেক বেশি মানুষকে আপনারা নিজের থেকেই ফিরিয়ে আনতে পারবেন’।
রাজ্য বিজেপি-র ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে বরাবরই ‘দূরত্ব’ রয়েছে তথাগতর। ভোটে পরাজয় নিয়ে তিনি প্রথম থেকেই ‘কে’, ‘এস’, ‘এ’, ‘ডি’ নামসংক্ষেপের মাধ্যমে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, শিবপ্রকাশ, অরবিন্দ মেনন ও দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ শানিয়ে আসছেন। সেই ধারা রেখেই বুধবার তিনি টুইট করেন, ‘একজন খুব কাছের মানুষ এসে খুব কান্নাকাটি করছিলেন। বলছিলেন, কয়েক হাজার মানুষ, যাঁরা বিজেপি-র হয়ে কাজ করেছেন, তাঁরা তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের চাপে ঘরছাড়া। বড় অঙ্কের আর্থিক জরিমানার বিনিময়ে তাঁদের বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। আমি অসহায়। রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কে-এস-এ পালিয়ে গিয়েছেন। ডি ফোন ধরছেন না’।
সেই টুইটে জবাবে চন্দ্রিমা লেখেন, ‘দয়া করে দ্রুত ঘরছাড়াদের তালিকা দিন। যাতে রাজনৈতিক পরিচয় না দেখে সবাইকে নিরাপদে বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়। একই সঙ্গে আমরা এটাও কথা দিচ্ছি যে, এই ধরনের ভয় দেখানোর কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগ কারও বিরুদ্ধে প্রমাণ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
ফল ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি রাজ্যে দলের বহু কর্মী আক্রান্ত ও ঘরছাড়া বলে দাবি করে আসছে। জেলায় জেলায় এমন তালিকাতৈরি করা হয়েছে বলে আগেই দাবি করেছে তারা। কিন্তু তথাগত কেন চন্দ্রিমাকে তেমন কোনও তালিকা দিলেন না? প্রশ্নের জবাবে তথাগত আনন্দবাজার ডিজিটালকে বলেন, ‘‘আমি বিজেপি-র একজন সাধারণ কর্মী মাত্র। আমার কাছে কোনও তালিকা নেই। আমায় এখন নামধাম জোগাড় করতে হবে।’’ তথাগত তালিকা দিতে না পারলেও তাঁর ওই টুইটের জবাব দিয়েছেন চন্দ্রিমা। লিখেছেন, ‘আপনি নিশ্চিত থাকুন যে, তৃণমূল এই ধরনের বিষয় ভালভাবে সামলানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যেখানে প্রয়োজন সেখানে আমরা আরও বেশি সতর্ক থাকব’।