মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (Calcutta Medical College & Hospital) থেকে করোনার (Corona) জীবনদায়ী ইঞ্জেকশন (Injection) টসিলিজুমাব (Tocilizumab) উধাও হওয়ার ঘটনায় এবার কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata Highcourt) জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে মোট ২৬টি টসিলিজুমাব চুরি হয়েছে। যার দাম প্রায় ১১ লক্ষ টাকা।
ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় রাজ্যের চিকিৎসক মহলে। চিকিৎসকদের একাধিক সংগঠন এব্যাপারে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছে। মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minsiter) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষও। পরে তিন সদস্যের আরও একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। দুটি কমিটিই আলাদা করে তদন্ত (Investigation) করে রিপোর্ট জমা দেবে।
সংকটজনক করোনা রোগীর প্রাণ বাঁচাতে টসিলিজুমাব (Tocilizumab) ইঞ্জেকশন ব্যবহার করেন চিকিৎসকরা (Doctors) । এক-একটি টসিলিজুমাব ইঞ্জেকশনের দাম প্রায় ৪২ হাজার টাকা। সরকারি হাসপাতালে কোনও রোগীকে এই ইঞ্জেনকশনটি দিতে গেলে তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনে (Sastha Bhawan) পাঠাতে হয়। স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনুমোদন মিললে তবে সেই ইঞ্জেকশন রোগীকে দেওয়া হয়। করোনাকালে এই ইঞ্জেকশনটির চাহিদা প্রচুর। বাজারে চাইলেই সব দোকানে মেলে না টসিলিজুমাব (Tocilizumab) ইঞ্জেকশন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে আচমকা উধাও হয়ে যায় ২৬টি টসিলিজুমাব ইঞ্জেকশন।
অভিযোগ, প্রভাব খাটিয়ে হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্সের কাছ থেকে ওই ইঞ্জেকশন হাতিয়েছেন এক চিকিৎসক। প্যাথলজি বিভাগের নমুনা পরীক্ষার ফর্মে ‘ভুয়ো প্রেসক্রিপশন’ বানানো হয়েছে। সেটা দিয়েই ইঞ্জেকশন গায়েব করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একটি অডিও ভাইরালের (Viral) পরেই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। অভিযুক্ত চিকিৎসক আবার রাজ্যের শাসকদলের নেতা তথা চিকিৎসক নির্মল মাজির (Nirmal Maji) ঘনিষ্ঠ বলেও জানা গিয়েছে। যদিও এই ঘটনায় তাঁর জড়িত থাকার অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন নির্মল মাজি। তাঁকে ফাঁসানোর চক্রান্ত করা হচ্ছে বলেও দাবি তাঁর।
এদিকে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরই নির্দেশ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে কমিটি। সেই কমিটিই বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবে। দোষীদের কোনওভাবে রেয়াত করা হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরই পাশাপাশি এই একই ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের আরও একটি কমিটি তৈরি হয়েছে। দুটি কমিটিই আলাদা করে একই ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে। এবার টসিলিজুমাব-কান্ডে কলকাতা হাইকোর্টেও জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের হয়েছে। আগামী ৭ জুন কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি হবে।