কোভিডের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়লে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি ছড়াতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করা হচ্ছে। তাই খুব তাড়াতাড়ি শিশুদের টিকার ডোজ দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় প্যানেল। এর মধ্যেই স্বস্তির খবর শুনিয়েছে ভারত বায়োটেক। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, জুন মাস থেকেই শিশুদের শরীরে কোভ্যাক্সিন টিকার ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে। ট্রায়ালের ফল সন্তোষজনক হলে বছরের তৃতীয় ভাগের মধ্যে শিশুদের জন্য করোনার ভ্যাকসিন এসে যাবে দেশের বাজারে।
ভারত বায়োটেকের প্রধান ডক্টর কৃষ্ণা এল্লা বলেছেন, ২ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের শরীরে কোভ্যাক্সিন টিকার পেডিয়াট্রিক ট্রায়াল শুরু হয়ে যাবে জুন মাসের মধ্যেই। টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্বের ট্রায়াল হবে। প্রতি পর্বের ট্রায়ালের পরে সেফটি ট্রায়ালের রিপোর্ট জমা করা হবে। সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে টিকার সুরক্ষা ও কার্যকারিতা নিয়ে কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল সবুজ সঙ্কেত দিলেই দেশের বাজারে শিসু ও কমবয়সীদের জন্য ভ্যাকসিনের ডোজ চলে আসবে। সংস্থার প্রধান বলছেন, কোভ্যাক্সিন টিকার উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। সেই পরিকাঠামোও তৈরি হচ্ছে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের তত্ত্বাবধানে কোভ্যাক্সিন টিকা তৈরি করেছে ভারত বায়োটেক। সংস্থার কর্ণধার বলছেন, টিকার উৎপাদন শুরু হওয়ার আগেই ১৫০০ কোটি ডোজের অর্ডার দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এখন কোভ্যাক্সিনের উৎপাদন আরও বাড়ানোর জন্য উত্তরপ্রদেশে দুটি পিএসএ প্ল্যান্ট তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে, গুজরাট ও বেঙ্গালুরুতেও নতুন ইউনিট খোলা হচ্ছে। আরও ৭০ কোটি টিকার ডোজ খুব তাড়াতাড়ি তৈরি করে ফেলা হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি ভ্যাকসিন তালিকায় এখনও নাম ওঠেনি কোভ্যাক্সিনের। সে নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে বলে জানিয়েছেন ডক্টর এল্লা। করোনা আবহে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হলে টিকার দুটি ডোজ নেওয়া হয়েছে কিনা সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে। তারজন্য হু জরুরি ভিত্তিতে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, কোন দেশ তাদের তৈরি ভ্যাকসিন নেওয়া হয়েছে কিনা সেটা দেখতে পারে, আর তা না হলে হু-র তালিকায় থাকা যে কোনও একটি ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পূর্ণ হয়েছে কিনা সেটা দেখবে। হু-র ইমার্জেন্সি ইউজ লিস্ট (ইইউএল)-এর তালিকায় যে ভ্যাকসিনগুলি রয়েছে তার মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড, মোডার্না, ফাইজার, অ্যাস্ট্রজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং চিনের সিনোফার্মের টিকার নাম রয়েছে। কিন্তু ভারতে তৈরি কোভ্যাক্সিন টিকার নাম নেই। ভারত বায়োটেকের কর্ণধার বলছেন, বছরের তৃতীয় ভাগে শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিনের ডোজ চলে আসার পরে হু-র কাছে ফের রিপোর্ট পেশ করা হবে। আশা করা যাচ্ছে, ততদিনে হু-র তালিকায় কোভ্যাক্সিনের নাম উঠে যাবে।