ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে কেন্দ্রের জবাব চাইল শীর্ষ আদালত

দেশের করোনা সংক্রমণ জনিত মামলায় কেন্দ্রকে আবার কড়া বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার অক্সিজেন সঙ্কট ও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন মনে করলে এবার আদালত হস্তক্ষেপ করবে।

একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, এটা জাতীয় বিপর্যয়। এখন রাজনীতি ও বিতর্কের সময় এটা নয়। এখন সকলের উচিত দেশের পাশে দাঁড়ানো। পাশাপাশি, করোনা ভ্যাকসিনের আলাদা আলাদা দাম কেন, তা নিয়েও মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

মঙ্গলবারের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট যে মন্তব্য করেছে তাতে বলা হয়েছে, “এখন জাতীয় বিপর্যয়, আদালত নীরব দর্শক হয়ে থাকতে পারে না। মানুষের জীবন বাঁচানোই আদালতের কাছে এখন অগ্রাধিকার। আদালত যখনই মনে করবে, তখনই হস্তক্ষেপ করবে।” সর্বোচ্চ আদালত এ-ও মনে করেছে, “হাইকোর্টগুলিরও এই বিষয়ে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”

এদিন করোনা ভ্যাকসিনের ভিন্ন দাম প্রসঙ্গে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। করোনা ভ্যাকসিনের কেন আলাদা আলাদা দাম? কেন্দ্রের কাছে সেই জবাব তলব করেছে শীর্ষ আদালত। এর পাশাপাশি, করোনা মোকাবিলা নিয়ে কেন্দ্রের পরিকল্পনাও জানতে চায় চেয়েছে শীর্ষ আদালত । টিকাকরণই কি করোনা মোকাবিলার একমাত্র উপায়? সঙ্কট মোকাবিলায় কেন্দ্রের জাতীয় পরিকল্পনা কী? সলিসিটর জেনারেলের কাছে তাও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত ।

শীর্ষ আদালত এদিন আবারও কেন্দ্রকে মনে করিয়ে দেয়, এখন জাতীয় সঙ্কট, কোর্ট রাজনৈতিক তরজার ও কাজিয়া করার জায়গা নয়। আমাদের সকলকে দেশকে সাহায্য করা উচিত।

এর আগে সোমবার , নির্বাচন কমিশনকে করোনা বৃদ্ধির জন্য তুমুল ভর্ৎসনা করেছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছিল , করোনা বিধি উড়িয়ে যখন রাজনৈতিক নেতারা প্রচার করছিলেন, তখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি নির্বাচন কমিশন। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য একমাত্র দায়ী নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতির জন্য কমিশনের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত বলেও আদালত মন্তব্য করে।

মাদ্রাজ হাইকোর্ট-এর প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ হুঁশিয়ারির সুরে বলে, ২ মে গণনার দিন করোনা বিধি মেনে কাজ করার বিষয়ে কমিশনের নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও মাদ্রাজ হাই কোর্টে জমা দিতে বলে । বলা হয় যদি কমিশন গণনা সংক্রান্ত পরিকল্পনা ২৯ এপ্রিলের মধ্যে না জানায় তাহলে ভোটগণনা স্থগিত করে দেওয়া হবে। আপনাদের জন্য সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি শিকার হতে দেব না।

মাদ্রাজ হাইকোর্টের এই হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এবার নড়েচড়ে বসেছে নির্বাচন কমিশন। যে পাঁচ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভোট হয়েছে, ভোটের ফল ঘোষণার পর বিশেষ পদক্ষেপ করার জন্য নির্বাচনী আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
কমিশনের তরফে বলা হয়েছে, ২ মে ফল ঘোষণার দিন কোনও বিজয় মিছিল করা যাবে না। রিটার্নিং অফিসারের কাছে সার্টিফিকেট নিতে যাওয়ার সময়, জয়ী প্রার্থীর সঙ্গে সর্বাধিক ২ জনের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। তবে এখন দেখা কমিশনের এই নির্দেশ কতটা মান্যতা পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.