২০২০-র লকডাউনের স্মৃতি আমাদের মন থেকে এখনও মুছে যায়নি। কারণ এখনও করোনা রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় প্রবল পরাক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। তবে সম্প্রতি যে হারে রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ হচ্ছে তাতে চিকিৎসকরা বলছেন সাময়িক লকডাউন করা জরুরি। চিকিৎসকদের যুক্তি, এর ফলে সংক্রমণের চেন ভেঙে যাবে। রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে সেটা আপাতত রক্ষা করা যাবে।
তবে লকডাউন হলে সাধারণ মানুষের কি হবে? যাত্রা দিন আনে দিন খায় তাদের কী হবে? এই প্রশ্নেও লকডাউন নিয়ে প্রশাসনিক নানান প্রশ্ন উঠছে । এখন সাময়িক লকডাউন হলে মানুষের মনে আবার ভয় শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যে কাজ হারানোর ভয়টাই সবচেয়ে বেশি। তাই রাজ্য প্রশাসনের প্রধান যিনি সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এখন লকডাউন করার কোনও ভাবনা রাজ্যের নেই। তাই চিকিৎসা পরিকাঠামোর ওপর চাপ কমাবার জন্য রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে ও মেডিক্যাল কলেজ ৫ হাজারের বেশি বেড বাড়ানোর সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন।
এদিকে চিকিৎসকদের বক্তব্য যথেষ্ট বাস্তব। তাদের মতে রাজ্যে রোজদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এই ঊর্ধ্বগতি রাখা যাচ্ছে না, যাবেও না। চিকিৎসকদের যুক্তি করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রাজ্যে যে ভাবে আছড়ে পড়েছে তাতে বিপদের বড় রকমের সংকেত রয়েছে। ডাবল, ট্রিপল মিউট্যান্ট ভাইরাস পশ্চিমবঙ্গে সক্রিয় হয়ে ব্যাপকভাবে মানুষদের আক্রান্ত করছে। গত চারদিন আগে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭ হাজারের কিছু বেশি। আজ শুক্রবার সেটা ১৩ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কাজেই এই মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের চেন ভাঙতে কম পক্ষ্যে ১০ দিনের লকডাউন করা জরুরি। চিকিৎসকরা বলছেন, এই লকডাউনের ফলে মানুষ বাড়ি থেকে বার হতে পারবেন না। এর ফলে সংক্রমণের পরিমাণ হ্রাস পাবে। তার ফলে রাজ্যের চিকিৎসা পত্রিকাঠামো কিছুটা হলেও মজবুত থাকবে। যদিও লকডাউনের মাধ্যমে করোনাকে নির্মূল করা যায় না বা যাবে না। সাময়িক একটা বিরাম পাওয়া যাবে, যেটা এই মুহূর্তে খুবই দরকার।