নির্মাণের কাজ শেষ হলে মহারাষ্ট্রের জৈতাপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বিশ্বের বৃহত্তম তকমা পাবে। জৈতাপুর প্রকল্পে সহায়তাকারী ফ্রান্সের পরমাণু চুল্লি নির্মাতা সংস্থা ইডিএফ-এর তরফে এই দাবি করা হয়েছে। সংস্থার তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আশা করা হচ্ছে আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এ সংক্রান্ত চুক্তির রূপরেখা চূড়ান্ত হয়ে যাবে’।
আমেরিকার সংস্থা ‘জিই স্টিম পাওয়ার’-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে জৈতাপুরে ৬টি তৃতীয় প্রজন্মের ইপিআর পরমাণু চুল্লি নির্মাণ করবে ইডিএফ। নির্মাণের কাজ শেষ হলে ১০ গিগাওয়াট (১০ হাজার মেগাওয়াট) বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে জৈতাপুর। যা দিয়ে ৭ কোটি পরিবারের বিদ্যুতের চাহিদা মিটবে।
ইডিএফ-এর পরমাণু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জেভিয়ার উরসাত জানিয়েছেন, প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হতে ১৫ বছর লাগলেও তার অনেক আগেই বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজ শুরু হবে সেখানে। এই পরমাণু বিদ্যুৎপ্রকল্পের মাধ্যমে অন্তত ২৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান এবং ২,৭০০ জনের চাকরির ব্যবস্থা হবে বলেও ফরাসি সংস্থাটির দাবি।
পরমাণু চুল্লি স্থাপনের জন্য এখনও ভারত সরকারের সঙ্গে ইডিএফ-এর চুক্তির অঙ্ক প্রকাশ্যে আসেনি। ইডিএফ সূত্রের খবর, এ বিষয়ে সংস্থার তরফে ভারতের রাষ্ট্রয়ত্ত সংস্থা ‘পরমাণু বিদ্যুৎ নিগম’ (এনপিসিআইএল)-এর কাছে নির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রিত্বের মেয়াদ ফুরনোর কয়েক মাস আগে ২০১৪-এর জানুয়ারি মাসে মনমোহন সিংহ শিলান্যাস করেছিলেন মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলার এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের। তারও ৪ বছর আগে এ বিষয়ে ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজির সঙ্গে জৈতাপুর পরমাণু চুল্লি স্থাপন এবং জ্বালানি সরবরাহ সংক্রান্ত চুক্তি করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরমাণু শক্তিবিরোধী আন্দোলনের কারণে কাজ ব্যাহত হয় একাধিকবার। পাশাপাশি, ২০১১ সালে জাপানোর ফুকুশিমা পরমাণুকেন্দ্রের দুর্ঘটনা জৈতাপুরের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিল।
সে সময় শিবসেনা এই পরমাণু প্রকল্পের বিরোধিতায় আন্দোলনে নেমেছিল। কিন্তু বর্তমানে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট-সরকার চালানোর কারণে জৈতাপুর বিরোধিতায় তেমন সরব হয়নি মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের দল।