বাংলার_গর্ব অসীমা চট্টোপাধ্যায়

অসীমা চট্টোপাধ্যায় (২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১৭ – ২২ নভেম্বর, ২০০৬) একজন ভারতীয় জৈব রসায়নবিদ ও উদ্ভিদ রসায়নবিদ ছিলেন। তিনি ভিঙ্কা অ্যালকালয়েডের ওপর গবেষণা করেন এবং ম্যালেরিয়া ও মৃগীরোগের ঔষধ প্রস্তুত করেন।
অসীমা চট্টোপাধ্যায় (বিবাহ-পূর্ববর্তী উপাধি মুখোপাধ্যায়) ১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ শে সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ভারতের কলকাতা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব হতেই মেধাবী অসীমা স্কুলজীবনের পরে ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে রসায়নবিদ্যায় স্নাতক হন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জৈব রসায়নবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই উদ্ভিদ রসায়ন এবং কৃত্রিম জৈব রসায়নের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়া ইউনিভার্সিটি অব উইস্কনসিন, ম্যাডিসন ও ক্যালটেক ইত্যাদি আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানেও তিনি গবেষণার সুযোগ পান।
অসীমা চট্টোপাধ্যায় ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা শহরের লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে রসায়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম নারী ছিলেন যাকে কোন ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট অব সায়েন্স উপাধি প্রদান করেন। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রাজাবাজার অঞ্চলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি কলেজ অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠানের রসায়ন বিভাগের সহ-অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে্র ঐতিহ্যশালী খয়রা অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন এবং এই পদে তিনি ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত থাকেন।
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে অসীমা চট্টোপাধ্যায় ভারতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি প্রথম মহিলা হিসেবে রসায়ন বিজ্ঞানে শান্তি স্বরূপ ভটনাগর পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে পদ্মভূষণ প্রদান করা হয়। এই বছরেই তিনি প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী হিসেবে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সাধারণ সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি হতে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের মে পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
অসীমা চট্টোপাধ্যায় ২০০৬ সালের ২২ শে নভেম্বর পরলোকগমন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.