টেলিভিশনের কোনও অনুষ্ঠান বা সংবাদ যদি হিংসায় উস্কানি দেয়, সরকারকে সক্রিয় হয়ে তা বন্ধ করতে হবে। বৃহস্পতিবার এমনই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা বলেন, সংবাদ পরিবেশন নিয়ে যে আইন আছে, তা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা উচিত। বিচারপতি বলেন, “আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করতে হলে হিংসায় উস্কানি দেওয়া বন্ধ করা দরকার। কিন্তু সরকার এ ব্যাপারে কিছুই করছে না।”
টিভিতে নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিংসা ছড়ানো নিয়ে কয়েক বছর ধরেই বিতর্ক চলছে। এদিন এসম্পর্কে একটি পিটিশন শোনে তিন বিচারপতির একটি বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন ওই বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি এ এস বোপান্না ও বিচারপতি ভি রামসুব্রমনিয়াম।
গতবছর দিল্লিতে তবলিগি জামাতের সভা নিয়ে যেভাবে বিভিন্ন চ্যানেলে রিপোর্টিং করা হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে জামায়েত উলেমা ই হিন্দ, পিস পার্টি ও আরও কয়েকটি সংগঠন। তার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকার, প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া ও ব্রডকাস্টিং অ্যাসোসিয়েশনকে নোটিশ দেয়। আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল, বিভিন্ন চ্যানেল সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে তবলিগি জামাতের সমাবেশের রিপোর্টিং করেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি আদালতে বলেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে টিভির আপত্তিকর অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, “সরকার ওই ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ করার জন্য কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। যে কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধেই বিদ্বেষ ছড়ানো হতে পারে।”
দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলে হিংসা ছড়ানোর পরে কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেকথা উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, “কৃষকদের মিছিলের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এই ধরনের সমস্যা যে কোনও সময় হতে পারে।”
শীর্ষ আদালত জানায়, তারা চায়, সরকার কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধন করুক। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ সরকারকে জানানো হবে। তাঁর কথায়, “বেশ কয়েকটি টিভি প্রোগ্রামে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে। এসম্পর্কে বিস্তারিত জানানো যেতে পারে। কিন্তু লাইভ চ্যাট শো-য় কেউ যদি আপত্তিকর কিছু বলে, তাকে থামানো সম্ভব নয়।”
প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা কারও মুখ বন্ধ করতে চাই না। যে ধরনের সম্প্রচার মানুষকে হিংসায় উস্কানি দেয়, তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। এখন মানুষ টিভিতে যা খুশি তাই বলতে পারে।”