জল্পনার অবসান, ‌আগামী ঘরোয়া মরশুমে এই দলের হয়েই খেলবেন অশোক দিন্দা

বাংলায় হয়ে আর নয়। আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘‌নৈছনপুর এক্সপ্রেস’‌ অশোক দিন্দা (Ashok Dinda)। তারপর থেকেই চলছিল জল্পনা। তবে কোন দলে দেখা যাবে ভারতীয় পেসারকে? অবশেষে সেই জল্পনার অবসান হল। আগামী মরশুমে‌ গোয়ার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে নামবেন অভিজ্ঞ এই পেসার। সোমবার সামনে এসেছে এই খবর।

সংবাদসংস্থা PTI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোয়া (Goa) ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব বিপুল ফাড়কে দিন্দার যোগদানের কথা স্বীকার করে নেন। বলেন, ‘‌‘‌হ্যাঁ, আমরা অশোক দিন্দাকে একবছরের জন্য দলে নিয়েছি, তবে যদি মরশুম শুরু হয় তো।’‌’ আসলে করোনা আবহে আইপিএল বিদেশে সরানো হলেও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় বিসিসিআইয়ের পক্ষে। আর তাই হয়তো আসন্ন ঘরোয়া মরশুম পুরোপুরি বাতিল বা একটি বা দু’‌টি টুর্নামেন্ট আয়োজিত হতে পারে


এদিকে, দিন্দার বাংলা (West Bengal) ছেড়ে যাওয়া একপ্রকার নিশ্চিতই ছিল। CAB তাঁকে এনওসি-ও (NOC) দিয়ে দিয়েছিল। দিন্দা সাফ জানিয়েছিলেন যেখানেই যান, বাংলার জার্সিতে আর কখনও বোলিং করবেন না। পরবর্তীতে তিনি টিমের বোলিং কোচ হয়ে ফিরে আসতে রাজি। কিন্তু বাংলার হয়ে বোলিং আর নয়। আসলে দিন্দার অভিযোগ তিনি সোজাসাপটা রাজনীতির শিকার

সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে দিন্দা বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেছিলেন, “দেখুন পারফরম্যান্স বা স্কিল দেখিয়ে কেউ আমাকে টিম থেকে বার করতে পারত না। গত ছ’বছর ধরে রনজি ট্রফিতে বাংলার সেরা উইকেটশিকারি ছিলাম আমি। গত ১৫ বছর ধরে ক্রিকেটে তিনটে ফর্ম্যাটে টানা উইকেট নিয়ে গিয়েছি। কিন্তু অরুণলাল কোচ হয়ে আসার পরই সব পালটে গেল। উনি আসার পর থেকে বলতে শুরু করলেন, আমি ফিট নই। আমি সুইং, পেস, সব হারিয়েছি। যথেষ্ট বোলিংও করছি না। উনি বললেন, আমাকে ইয়ো ইয়ো টেস্ট পাশ করতে হবে। দিলাম পরীক্ষা। ১৬-র বদলে ১৬.২ পেলাম। তারপর বলা হল, আমাকে লং ডিসট্যান্স দৌড়তে হবে। ফিটনেসের প্রমাণ দিতে। গত বেশ কয়েক বছর ধরে আমি সেটা করিনি। পাওয়ার ট্রেনিং করতাম শুধু। কারণ আমি তাতেই অভ্যস্ত ছিলাম। বলে দিয়েছিলাম, ও রকম লম্বা দৌড়নো আমার পক্ষে সম্ভব নয়,” টানা বলে যান দিন্দা। সঙ্গে যোগ করেন, “উনি আর একদিন বললেন, রাস্তায় দৌড়তে হবে। আরে, আমাকে অ্যান্ড্রু লিপাস বলেছিলেন যে রাস্তায় কখনও দৌড়বে না। তাতে মাসল শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু লালজি বললেন, গোটা টিম যখন সেটা করছে, আমাকেও করতে হবে। আমি পরিষ্কার না করে দিয়েছিলাম। তাতে উনি রেগে যান।”


বাংলার বোলিং কোচ রণদেব বসুকে নিয়েও বিষোদ্গার করেন দিন্দা। যাঁর সঙ্গে প্রকাশ্য ঝামেলার জেরে গত রনজি চলাকালীন টিম থেকে বাদ পড়তে হয় দিন্দাকে। “রণদেবের সঙ্গে কোনও কালেই বনিবনা ছিল না আমার। কোচ হিসেবে ওকে সম্মান করলেও মানুষ হিসেবে করি না। ও আমার অনেক ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। প্রথম প্রথম গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু গত রনজিতে অন্ধ্রপ্রদেশ ম্যাচের আগে টিম মিটিংয়ে দেখলাম, রণদেব স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ফিসফিস করছে অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের সঙ্গে। আমি প্রথমে বারণ করি। বলি, যা বলার জোরে বলো। প্ল্যানিংয়ের আমিও অংশ হতে চাই। কিন্তু ও আবার ফিসফিস করতে শুরু করে। যার পর থাকতে না পেরে আমি ফেটে পড়়ি। তারপর মাঠেও ওকে একদিন গালিগালাজ করি আমি, মানছি। কিন্তু ও কখনওই আমার সঙ্গে সম্পর্কটা ঠিক রাখার চেষ্টা করেনি। আর লালজি? উনি বললেন, রণদেবের কাছে ক্ষমা চাইতে। বললাম, আগে বিচার তো করুন, কে ঠিক, কে ভুল। উনি শুনলেন না। আমিও বলে দিলাম, বাংলায় আর আমি নেই।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.