স্কুলে গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগ মামলায় ৫৭৩ জনকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে এতদিন তাঁদের যে বেতন দেওয়া হয়েছে, তাও ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘গ্রুপ ডি নিয়োগে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে।
২০১৬ সালে রাজ্যের স্কুলে গ্রুপ ‘ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। বুধবার হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি বলেন, ‘গ্রুপ ডি নিয়োগে আকাশছোঁয়া দুর্নীতি হয়েছে।’ সেই পরিস্থিতিতে নিয়ম না মেনে যে ৫৭৩ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। তাঁরা এতদিন যে বেতন পেয়েছেন, তাও ফেরত দিতে হবে। জেলা স্কুল পর্যবেক্ষকদের (ডিআই) সেই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে স্কুলে গ্রুপ ‘ডি’ কর্মী নিয়োগ মামলায় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল, সেই কমিটিকে আগামী সোমবারের (১৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের যে সুপারিশ করেছিল রাজ্য সরকার, তাতে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ের পর প্যানেল তৈরি করে দেয় কমিশন। অভিযোগ ওঠে, ২০১৯ সালে প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগ উঠেছিল, বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল ২৫ জনকে। পরে দাবি করা হয়েছিল, আরও অনেক প্রার্থীকে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে।
সেই মামলায় প্রাথমিক সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পর্ষদ এবং কমিশনের হলফনামা থেকেই স্পষ্ট যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার অস্বচ্ছতা আছে। যেহেতু দুটিই সংস্থা রাজ্যের, তাই প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই। সেই রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। প্রাথমিকভাবে তিন সপ্তাহের জন্য সিবিআই অনুসন্ধানের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্ত। যদিও গত বছরের ডিসেম্বরে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, স্কুলে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ মামলায় সিবিআই অনুসন্ধান করবে না।