আপাতত কলকাতার কোনও ট্রামলাইন বন্ধ করা যাবে না। কড়া নির্দেশ দিয়ে ফের এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার উচ্চ আদালত জানিয়েছে, আদালতের নিযুক্ত কমিটির রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত বন্ধ করা যাবে না শহরের কোনও ট্রামলাইন। আবার দু’সপ্তাহ পরে ওই মামলায় পরবর্তী শুনানি হবে।
মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, কলকাতার কোনও ট্রামলাইন বন্ধ করা যাবে না। আগে হাই কোর্টের নিযুক্ত কমিটি বিষয়টি পরীক্ষা করে রিপোর্ট দেবে। সেই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সড়কপথ থেকে ট্রামলাইন সরানোর কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। আদালত জানিয়েছে, কলকাতার ঐতিহ্য ট্রামকে রক্ষা করতে সচেতন হতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই। তা ছাড়া, খিদিরপুরে ট্রামলাইন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কে নিয়েছিলেন, সেই বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে কলকাতা পুলিশ।
উল্লেখ্য, এর আগেও ওই মামলায় কলকাতায় ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। বলা হয়েছিল, ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার ছবি-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট রাজ্যকে জমা করতে হবে আদালতে। এর পর পুলিশ, পরিবহণ বিশেষজ্ঞ, কলকাতা পুরসভা, রাজ্য পরিবহণ নিগম-সহ বিভিন্ন পক্ষের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল, ট্রাম সংরক্ষণের বিষয়ে পর্যালোচনা করে দেখবে ওই কমিটি। এরই মধ্যে আবার ওই মামলার শুনানিতে জানানো হয়, শহরের কয়েকটি এলাকায় ট্রামলাইন বন্ধের কাজ শুরু হয়েছে। যদিও রাজ্য জানায়, রাজ্য পরিবহণ দফতরের তরফে ট্রামলাইন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়নি। ওই কাজ কারা করছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। বরং রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ময়দান থেকে খিদিরপুর পর্যন্ত রুটে পিপিপি মডেলে ট্রাম চালানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। এর পরেই প্রধান বিচারপতি প্রস্তাব দেন, কোনও বেসরকারি সংস্থা আগ্রহী হলে তাদের সাহায্যও নিতে পারে রাজ্য।
শহরের রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি নাগরিক সংগঠন। ঘটনায় একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়। মামলাকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল, রাস্তায় যাতে ট্রাম চলতে না পারে, তাই কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট এবং খিদিরপুরে ট্রামলাইন পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এ বার এই নিয়ে কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট।