Bangladesh: ‘রিমালে’ মৃত্যু অন্তত ১৭! দেড় কোটি মানুষ বিদ্যুৎহীন, প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ক্ষ‌তিগ্রস্ত…

 ঘূর্ণিঝড় ‘রিমালে’র তাণ্ডবে বাংলাদে‌শে এখনও পর্যন্ত মোট ১৭ জন নিহত হ‌য়ে‌ছেন বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিলেন! এবং সেখানকার প্রায় ৪০ লাখ মানুষ রিমালের জেরে কোনও কোনও ভাবে ক্ষ‌তিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সব দিক থেকেই বাংলাদেশের অবস্থা খুব খারাপ। তথ্য বলছে, এই ঝড়ে বাংলাদেশের ১৯ জেলার মোট ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৯৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজার ৪৮৩টি ঘরবাড়ি। আংশিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি। এবং রিমালের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় ১ কোটি ৫৫ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জানা গিয়েছিল, ঝড়ের তাণ্ডবের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এসব গ্রাহকের সরবরাহ বন্ধ রেখেছে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি। অনেক জায়গায় বিদ্যুৎবিহীন পরিস্থিতি ১৫-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত অতিক্রম করেছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে ঝালকাঠি জেলা শহর-সহ চার উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৬০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে আজ, বুধবারও। এতে পুরশহর ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা জলের তীব্র সংকটে পড়েছেন। বিদ্যুতের অভাবে পানীয় জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। সকাল পর্যন্ত রাজাপুর উপজেলা সদরের কিছু অংশে পল্লি বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ সরবরাহব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে। এ ছাড়া জেলার অধিকাংশ এলাকা এখনও বিদ্যুৎবিহীনই রয়েছে। 

এর আগে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গত রোববার রাত ১১টার দিকে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এতে বিপাকে পড়েছিলেন বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড ও পল্লি বিদ্যুতের প্রায় দেড় লাখ গ্রাহক। ঝালকাঠি পৌরসভা, কাঁঠালিয়া ও নলছিটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ওজোপাডিকো এবং বাকি এলাকা পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন। ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক মহাসড়ক-সহ বিভিন্ন এলাকায় ১১টি স্থানে ৩৩ হাজার কেভি লাইনের উপর গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া রিমালের তাণ্ডবে বিভিন্ন এলাকায় গাছ ও গাছের ডালপালা ভেঙে বিদ্যুতের লাইন ও খুঁটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মেরামতির কাজ চলছে। দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় বিপাকে স্থানীয় বাসিন্দারা। 

এদিকে জলের অভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বহুতল ভবনের বাসিন্দারা। স্থানীয় দিঘি-পুকুরেই হাতমুখধোয়া-সহ কাপড় ধোয়া ও থালা-বাসন ধোয়ার কাজ সারছেন অনেকেই। 

রিমালের তাণ্ডবে ঝালকাঠিতে ছয় শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ হাজার ১৯০ হেক্টর কৃষিজমির ফসল। বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে সাড়ে ৯ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ৭০টি পুকুর ও ১৫৯টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। জেলার কাঁঠালিয়া উপজেলায় গাছ চাপা পড়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রবিবার সন্ধেতেই বাংলাদেশের উপকূলে যথারীতি আঘাত হেনেছিল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলাদেশের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছিল দু’জন মারা যাওয়ার খবর মিলেছিল প্রথম পর্যায়েই। বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ ভেঙে হিয়েছিল।  বাংলাদেশের বহু নিচু অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। চট্টগ্রামের কিছু এলাকা-সহ অন্য অঞ্চলে পাহাড়ে ধস নামার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। অস্বাভাবিক জোয়ারের কারণে উপকূলজুড়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক জায়গায় বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কিছু অঞ্চলে নদীর জল বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.