অবশেষে রুপোলী ফসল এল দিঘায়, জলদি আসছে কলকাতায়

শ্রাবণ মাস মানেই যে বঙ্গে ভরা বর্ষণ, চলতি বছর এ দৃশ্য দেখাই যায়নি। আর বৃষ্টির পাশাপাশি এ বার দেখা মেলেনি ইলিশেরও। সাধ্যের অতীত কড়ি ফেললেও বাজারে মিলছে না রুপোলি শস্য। তবে অবশেষে খানিক বৃষ্টির দেখা পাওয়া গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। সেই সঙ্গে দিঘায় মৎস্যজীবীদের জালে উঠেছে ইলিশও। কিন্তু পরিমাণে বড়ই কম। ওজনেও তেমন কিছু নয়। তাই বিশেষ খুশি নন মৎস্যজীবীরা। ব্যবসায় মন্দার আশঙ্কায় মাথায় হাত পড়েছে মাছ ব্যবসায়ীদেরও।

জানা গিয়েছে, রবিবার প্রায় ১২ টন ইলিশ উঠেছে দিঘার মোহনায়। গত দু’দিনে মোট ১৮ টন ইলিশ উঠেছে দিঘাতে। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কিলো প্রতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা প্রতি কিলো। আর তার থেকে বেশি ওজনের ইলিশ বিকোচ্ছে ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা প্রতি কিলো দরে। তবে গত বছর এই সময় প্রায় ৭৫ থেকে ১০০ টন ইলিশের আমদানি ছিল বলে জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। সে তুলনায় এ বছর ইলিশের আমদানি খুবই কম। এ জন্য ব্যবসায় ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন মৎস্যজীবীরা।

তবে শনিবার থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আবহাওয়া বেশ অনেকটাই পাল্টেছে। তাই আগামি সাত দিনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ আমদানি হতে পারে বলে আশা করছেন দিঘা মোহনার মৎসজীবী এবং ব্যবসায়ীদের একটা অংশ। এক একটি ইলিশ ফিসিং বোট সাত দিনের জন্য মাছ ধরতে বেরোলে প্রায় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়। কিন্তু হালফিলে ইলিশ সহ অন্যান্য যা মাছ ধরা হচ্ছে তার বাজার মূল্য ৪০ থেকে ৬০ হাজারের মধ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই এর মধ্যে বহু টাকা লোকসান হয়েছে মৎস্যজীবী এবং ব্যবসায়ীদের। তাই আগামি কয়েকদিন ইলিশের যোগান বেশি হলে খানিক লাভের মুখ দেখবেন বলে আশা করছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

কিন্তু দিঘায় ইলিশের দেখা মিললেও প্রথমের দিকে দামে দরে খুব একটা সস্তা হবে বলে মনে করছেন না মৎস্যজীবীরা। কারণ দেরিতে বর্ষা আসায় ইলিশ উঠেছেই খুব কম। তার মধ্যে ঘনঘন আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে মাঝ সমুদ্র থেকে ফিরতে হয়েছে ট্রলার ও লঞ্চগুলিকে। তাতেও ভালোই লোকসান হয়েছে। ফলে ইলিশের দাম যে এখন চড়া হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

তবে দাম যাই হোক না কেন, কলকাতার বাজারে যে খুব জলদিই ইলিশ আসতে চলেছে এ কথা স্পষ্ট। অতএব, বাঙালির রসনা তৃপ্তিতে পাতে ইলিশ পড়তে আর বেশি দেরি নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.