আরএসএস নীরবে বিহারের বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য কাজ করে চলেছে

আরএসএসের ছয়টা শাখা সংগঠন, সেবা ভারতী, গঙ্গা সমগ্র, বনবাসী কল্যাণ আশ্রম, বজরং দল, অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বিহারের বন্যাদুর্গত জেলাগুলোয় ছড়িয়ে পড়েছে। তারা আক্রান্তদের খাবার, ওষুধ আর অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করছে।
আরএসএসের অমরেন্দ্র কুমার সিংহ জানলেন, যিনি এই সমগ্র ব্যবস্থার দয়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের এগারো হাজার স্বেচ্ছাসেবক বন্যাদুর্গত মানুষদের সাহায্যে কাজ করছে। তাঁরা এখনও পর্যন্ত ছেষট্টি হাজার মানুষের কাছে পৌঁছতে পেরেছেন। তাঁরা প্রতিদিন তাদের খাবার ও ওষুধপত্র সরবরাহ করছেন।
তাঁদের ত্রাণকার্য মূলত দুর্গম গ্রামে চলছে। সেখানে পৌঁছনোর জন্য তাঁরা বেসরকারি নৌকা ভাড়া করছেন। নৌকা দুর্লভ হয়ে ওঠায় এই কাজটা সহজ হচ্ছে না। কিন্তু এইসব গ্রামে সরকারি সংস্থাগুলো পৌঁছতে পারছে না।
আরএসএসের এই কাজ তাদের সহযোগী সংগঠন বিজেপির বিপরীত। বিজেপি মূলত বন্যাত্রাণ নিয়ে আন্দোলনেই ব্যস্ত। তারা রাজ্য সরকারকে রাজ্যের বারোটি জেলা জুড়ে হওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পঁয়ত্রিশ লক্ষ মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাপ দিচ্ছে।
যদিও আগামী চার বছরে বিহারে বিধান সভার নির্বাচন হবার কথা নয়, তাও দুর্গতদের কাছে আরএসএসের পৌঁছে যাওয়ায় এই সংগঠনটা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর বন্যাদুর্গত মানুষদের কাছে নিকটজন হয়ে উঠবে।
গত ২০১৫-৪ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে এই শ্রেণীর মানুষদের জন্যই আরজেডি-জেডিইউ জোট বিজেপি-নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটকে চূর্ণ করে ক্ষমতা অধিকার করেছিল বলে মনে করা হয়।
আরএসএসের সিংহ জানালেন, সরকার তাঁদের এই ত্রাণকার্য পরিচালনা করায় অনুৎসাহিতই করছে। কোনো কোনো সময় ত্রাণসামগ্রী ভর্তি নৌকা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আবার কখনও নৌকায় আরএসএসের ব্যানার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে।
বরিষ্ঠ বিজেপি নেতা সুশীল মোদী বললেন যে সরকার কোনো বেসরকারি সংগঠনকে ত্রাণকার্যে অংশগ্রহণ করতে দিতে রাজি নয়। এই জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে সরকারি ত্রাণকেন্দ্র পরিদর্শনে অনুমতি দেওয়া হয়নি।
আরও একটি উদাহরণ তুলে ধরে সুশীল মোদী জানালেন যে বখতিয়ারপুরে দাগহীন স্টীলের পাত্রের পরিবর্তে পাতার প্লেটে খাবার পরিবেশন করার জন্য একটা বেসরকারি সংস্থাকে সতর্ক করা হয়।
তিনি এও জানালেন, তাদের নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠতে পারে এই বলেও সতর্ক করা হয়। সুতরাং তারা চলে যায়।
বিহারের দুর্যোগ মন্ত্রী চন্দ্র শেখর বললেন, যদি বেসরকারি সংস্থাকে ত্রাণকার্যের অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে নৈরাজ্য তৈরি হবে। সরকার বন্যাদুর্গতদের জন্য কিছুই করছে না, এরকম মনোভাব তৈরি হতে দেওয়া যায় না।
শেখর বললেন যে ত্রাণকার্য বিষয়ে আরএসএসের দাবি হাস্যকর। তাদের কোথাওই দেখা যাচ্ছে না। এছাড়াও আরএসএস-পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য কিছুই করছে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বিমানে চড়ে পরিস্থিতি দেখে দিল্লীতে ফিরে যাচ্ছেন, তিনি বললেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.