করোনা আক্রান্ত রোগী বেরিয়ে পড়েছেন হাসপাতাল থেকে। বিগত কয়েকমাসে দেশে হোক কিংবা বিদেশে – এ ধরনের বহু খবর প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু কোনও দেশের প্রেসিডেন্ট এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন! নিজেই ভেঙে ফেলছেন করোনা সংক্রান্ত সমস্ত বিধি! বিপন্ন করছেন অন্যদের জীবনও? তাও আবার সেই দেশটি কি না বিশ্বের উন্নততম দেশগুলির মধ্যে একটি। শুনে অবাক লাগলেও এমনই কীর্তি এবার ঘটিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (US President Donald Trump)।
শুক্রবার করোনা (Covid-19 Positive) আক্রান্ত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প। মেলানিয়ার মৃদু উপসর্গ থাকলেও হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে অক্সিজেন দিতে হয়েছিল। এরপরই তাঁকে মেরিল্যান্ডের ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারে (Walter Reed National Military Medical Center) ভরতি করা হয়। কিন্তু রবিবার আচমকাই বেরিয়ে পড়েন ট্রাম্প। নিজের গাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন। সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। সেই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।
আসলে করোনার জীবাণু বাতাসেও ছড়ায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) অনেক আগেই তা জানিয়ে দিয়েছে। আর চিকিৎসকদের দাবি, এভাবে বাইরে বেরিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আর পাঁচজন সাধারণ মানুষেরই জীবন বিপন্ন করে তুললেন। এতে ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী যেকোনও ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারেন। তাছাড়া গাড়িতে থাকা চালক কিংবা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
এদিকে, ওই সময় ট্রাম্পের মুখে মাস্ক থাকলেও গাড়ির জানলার কাচ নামানো ছিল, যা দেখে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা করছে চিকিৎসকমহল। কেউ কেউ আবার এটাকে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর কৌশলও মনে করছে। জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার মেডিসিন বিভাগের প্রধান জেমস ফিলিপ বলেন, ‘‘ওই গাড়িতে থাকা প্রত্যেককেই ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। ট্রাম্পের এই রাজনৈতিক নাটকের জন্য ওই মানুষগুলোর জীবন বিপন্ন হল। ওরাও এবার সংক্রমিত হতে পারে। মারাও যেতে পারে।’’ দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে নিজেই করোনা সংক্রান্ত নিয়ম ভেঙেছেন ট্রাম্প। বিপন্ন করেছেন অন্যের জীবন। তাই কেউ আবার গোটা ঘটনাটিকে ‘লজ্জাজনক’ও আখ্যা দিয়েছেন।
এদিকে, ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি হাসপাতালের চিকিত্সকদের অভিমত, বর্তমানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাস্থ্য ভালই রয়েছে। তবে, আগামী ৪৮ ঘণ্টা তাঁর জন্য ‘ক্রিটিক্যাল’।