যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মৃত্যুতে পকসো আইনের দাবি জানিয়েছে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। ছাত্রমৃত্যুর মামলায় কি তবে এই আইন জুড়বে কলকাতা পুলিশ? সোমবার এই সংক্রান্ত প্রশ্নে মুখ খুললেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আইন অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের যে পড়ুয়ার মৃত্যু হয়েছে, তার বয়স ১৮ বছর হয়নি। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর ৯ মাস ৯ দিন। রবিবারই এই ঘটনায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের উপর যৌন নির্যাতনের আইন পকসোয় বিচারের দাবি করেন কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী।
গত বুধবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের এ-২ ব্লকের নীচে এক ছাত্রকে উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। র্যাগিংয়ের কারণে মৃত্যু বলে অভিযোগ করে ছাত্রের পরিবার। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন ছাত্রের বাবা। খুনের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে কলকাতা পুলিশ। এই ঘটনায় শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং হস্টেলের আবাসিক সৌরভ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। রবিবার সকালে গ্রেফতার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়া দীপশেখর দত্ত এবং মনোতোষ ঘোষকে। তিন জনেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন।
সোমবারও ওই ঘটনার তদন্তে যাদবপুরের বেশ কয়েক জন পড়ুয়াকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রথম বর্ষের কয়েক জন পড়ুয়া যাঁরা হস্টেলের আবাসিক, তাঁদের কয়েক জনের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। সোমবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে যান ডিসি (এসএসডি) বিদিশা কালিতা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। কিছু জিনিস বুঝতে পেরেছি। কিছু জিনিসে ধোঁয়াশা রয়েছে। আমরা সব দিক খতিয়ে দেখছি।’’
বুধবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানতে আবাসিক পড়ুয়াদের আরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। ছাত্রমৃত্যুর পর কোনও কোনও পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অনেকে আবার শহরের বাইরে গিয়েছেন। তাঁরা কারা? কেনই বা হস্টেল ছেড়ে দিলেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। যাঁরা বুধবারের পর থেকে হস্টেল ছেড়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ছাত্রমৃত্যুর সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ আছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা-ও।