ভোট মিটতেই নৈহাটিতে তৃণমূল প্রার্থীর ছেলেকে মারধরের অভিযোগ, গ্রেফতার চার

নৈহাটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন মিটতেই সেখানকার তৃণমূল প্রার্থী সনৎ দে-র পুত্রকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার রাতে সনতের পুত্র শুভম দে-কে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে তৃণমূলেরই অন্য একটি গোষ্ঠীর দিকে। পাল্টা ওই গোষ্ঠীর কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সনৎ-‘ঘনিষ্ঠ’দের দিকে। শুভমকে মারধরের অভিযোগে এখন পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিজেপি নেতা অর্জুন সিংহ এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তোলা আদায় নিয়ে ওই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের জেরেই এই ঘটনা।

বুধবার রাজ্যের ছয় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ছিল। তার মধ্যে ছিল নৈহাটিও। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে নৈহাটির লিচুবাগানঘাট এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেন শুভম। অভিযোগ, সেই সময় দুই যুবক দ্রুত গতিতে বাইক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে বচসা হয় শুভমের। কিছু ক্ষণ পরে ওই দুই যুবক দলবল নিয়ে এসে তৃণমূল প্রার্থীর পুত্রকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।

আহত অবস্থায় শুভমকে নৈহাটির একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অভিযোগ, এর পরে বুধবার রাতেই লিচুবাগানঘাট এলাকায় ঢুকে মৃত্যুঞ্জয় মাহাতো এবং উমা রাও নামে দু’জনকে মারধর করেন সনৎ-‘ঘনিষ্ঠ’ কয়েক জন। অভিযোগ, পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল সেই সময়। পরে শুভমকে মারধরের অভিযোগে মৃত্যুঞ্জয় এবং উমাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। একই অভিযোগে সুশান্ত মুখোপাধ্যায় ওরফে বুড়ো এবং রঞ্জিত দাস নামে অন্য দু’জনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উমার স্ত্রী লক্ষ্মী রাও জানিয়েছেন, বুধবার ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরে তাঁর স্বামী শুয়ে ছিলেন। রাতে কয়েক জন রড হাতে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হন। লোহার গেটে ধাক্কা দিতে থাকেন। লক্ষ্মীর কথায়, ‘‘আমি দরজা খুলে দিলে ওঁরা ঘরে ঢুকে আমার স্বামীকে মারধর শুরু করেন। বলতে থাকেন, তুই ছিলিস! এর পর ওঁকে মারতে মারতে ঘর থেকে বার করে নিয়ে যান ওঁরা। সঙ্গে পুলিশও ছিল। আমি পুলিশকে অনুরোধ করি, ওঁকে যাতে মারধর না করা হয়।’’ অভিযুক্তেরা কি পরিচিত? লক্ষ্মী জানিয়েছেন, অভিযু্ক্তদের চেনেন না তিনি। কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত, তা-ও জানেন না। তবে তাঁর স্বামী তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি করেছেন।

প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপি নেতা অর্জুনের দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে এই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘তোলা আদায় সনৎ করবেন, না তাঁর বিরোধী পক্ষ, সেই নিয়ে ঝামেলা থেকেই এ সব হয়েছে। তবে অবশ্যই চাইব, প্রার্থীর পুত্র দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরুন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.