সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটিতে উদযাপিত হল স্বামী বিবেকানন্দের ১৬১তম জন্মবার্ষিকী। এই উদযাপনকে আরও রঙিন করে তুলতে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির প্রায় দেড় হাজার শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মীরা এক সুন্দর ‘প্রভাত ফেরিতে’ যোগ দিয়েছিলেন। প্রাণবন্ত এই প্রভাতফেরি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে শুরু করে সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির নিউটাউন ক্যাম্পাস পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে। সর্বজনীন ভ্রাতৃত্বের প্রচারক ও তারুণ্যের অদম্য চেতনায় বিশ্বাস ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। জন্মবার্ষিকীতে তাই গানের মাধ্যমে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে ছিলেন বড়িশা রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ অলোকেশ মহারাজ। তিনি বলেন, “আমি স্বামী বিবেকানন্দকে জীবন উৎসর্গ করেছি এবং তাঁর জীবন দর্শনে ভিত্তি করে নিজের জীবনযাপন করার চেষ্টা করেছি। আজকের যুব সম্প্রদায়কেও স্বামীজির প্রচারের প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে বার করতে হবে এবং বুঝতে হবে কী ভাবে তাঁর মৃত্যুর এত বছর পরেও তাঁর এই মতাদর্শ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।”
অলোকেশ মহারাজ আরও বলেন, “স্বামী বিবেকানন্দ এখনও মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন। যুব সম্প্রদায়কে আলোকিত করার পাশাপাশি তিনি বিগত প্রজন্মকেও আলোকিত করেছেন। তাঁর ১৬১তম জন্মদিন উদযাপন মানুষের হৃদয়ে তাঁর অমরত্বের এক অনন্য প্রমাণ।”
অনুস্থানে সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, অধ্যাপক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আজ একটি বিশেষ দিন। আজ এমন এক জন মানুষের জন্মবার্ষিকী, যিনি সমগ্র যুব সম্প্রদায়ের প্রতিমূর্তি হিসাবে দাঁড়িয়ে আছেন। আমরাও তাঁর জীবন দর্শনকে গ্রহণ করতে চাই। স্বামীজির আদর্শ মেনে আমরা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাই যে কেউ একা টিকে থাকতে পারে না। এই সমাজের প্রতি আমাদের ঋণ। তাই এই সমাজের সার্বিক বৃদ্ধির জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।”
সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক সুমন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “স্বামীজির জীবন দর্শন আজও প্রাসঙ্গিক। যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি আজও আলোর দিশারী। তাঁর দর্শন ও শিক্ষাকে ধরে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের বিষয়ে সময়ের অনেক আগে থেকেই আমাদের আলোকিত করেছেন। বলেছেন, প্রতিটি আত্মাই পবিত্র। আমাদের তাঁর ইতিবাচকতা এবং প্রাণবন্ততার দর্শনকে ধরে রাখতে হবে।”
সুমন চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, “সরকার স্বামীজির জন্মদিনকে জাতীয় যুব দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমরা এই দিনটিকে শুধু বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাতেই উদযাপন করছি না, সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিও অংশগ্রহণ করছে। স্বামীজির জ্ঞান যুব সম্প্রদায়কে দৈনন্দিন জীবনে এগিয়ে চলতে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর দেওয়া শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের জীবনে একটি সঠিক পরিপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ যাত্রাকে সুনিশ্চিত করে।”
সকলের ভালবাসা, মানবতা ও বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্বের আভায় প্রভাত ফেরিতে নাচ ও গানের মাধ্যমে সুন্দর ভাবে উদযাপিত হল স্বামীজির ১৬১তম জন্মবার্ষিকী।