সুশান্ত মামলা: প্রয়াত অভিনেতার মৃত্যু রহস্য ভেদে আমেরিকার সাহায্য চাইল CBI

সুশান্ত মামলার নতুন মোড়! এবার প্রয়াত অভিনেতার ডিলিট হওয়া ই-মেল আর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ও চ্যাট সম্পর্কিত সব তথ্য হাতে পেতে আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইল। ১৪ই জুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে এমন কোনও দিক তদন্ত প্রক্রিয়ার বাইরে রাখতে চান না কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।

২০২০ সালের ১৪ই জুন সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার হয়েছিল অভিনেতার দেহ। প্রাথমিকভাবে মুম্বই পুলিশের তরফে বলা হয়েছিল আত্মহত্যাই করেছেন সুশান্ত, সেই নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত বছর অগস্টে এই মামলার দায়ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। তারপর থেকে প্রায় দেড় বছর অতিক্রান্ত, কিন্তু সুশান্তের তদন্ত প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে সেই নিয়ে বিশেষ কোনও তথ্য মেলেনি সিবিআইয়ের কাছ থেকে। বহু মাস পর সুশান্ত মামলার সিবিআই তদন্ত নিয়ে নতুন আপডেট হাতে এসেছে হিন্দুস্থান টাইমসের কাছে। ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

সিবিআইয়ের এক সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে, সিবিআই-এর তরফে সুশান্তের ই-মেল ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের ডিলিট হওয়া তথ্য চাওয়া হয়েছে মার্কিন সরকারের কাছ থেকে। দুই দেশের মধ্যে একটি MLAT  অর্থাত্ মিউচুয়াল লিগাল অ্যাসিসটেন্স ট্রিটি রয়েছে যার জেরে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত দুই কোম্পানি গুগল এবং ফেসবুকের কাছ থেকে অভিনেতার অ্যাকাউন্টের মুছে দেওয়া তথ্য চাওয়া হয়েছে। ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মাধ্যমে এই তথ্য দেওয়া হয়, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের মাধ্যমে ওই দুই সংশ্লিষ্ট সংস্থা ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দেবে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিবিআই আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আমরা এই মামলায় কোনও নিষ্পত্তিতে পৌঁছানোর আগে কোনও দিক অধরা রাখতে চাই না। আমরা জানতে চাই কী এই ধরণের কিছু মুছে দেওয়া চ্যাট বা পোস্ট রয়েছে কিনা, যা আমাদের এই মামলায় নতুন কোনও তথ্য দিতে পারে’। 

সিবিআইয়ের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সুশান্তের পারিবারিক আইনজীবী সিনিয়র অ্যাডভোকেট বিকাশ সিং। তাঁর কথায়, সুশান্তের মৃত্যুর সঙ্গে অনেক রহস্য জড়িয়ে রয়েছে এবং সিবিআই সঠিক পথেই তদন্ত চালাচ্ছে। 

চলতি বছর ১৪ জুন, সুশান্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে জানা গিয়েছিল সিবিআই সুশান্তের মৃত্যুপূর্ব মনের অবস্থা জানতে একটি বিষেশজ্ঞ দলের মাধ্যমে সাইক্রিয়াটিক এভালুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করাচ্ছে। সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটারির রিপোর্টও খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। 

সুশান্তের মৃত্যুর ৪০ দিনের মাথায় সুশান্তের বাবা কেকে সিং প্রয়াত অভিনেতার বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তী, তাঁর পরিবার (ভাই,বাবা,মা), ম্যানেজার শ্রুতি এবং সুশান্তের হাউজ ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডার বিরুদ্ধে অভিনেতাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনেন। পরবর্তীতে সুশান্তকে খুন করা হয়েছে বলেও কেকে সিংয়ের আইনজীবী বিকাশ সিং দাবি করেন। সুশান্তের মৃত্যু তদন্ত নয়া মোড় নেয়, রিয়ার মাদকযোগের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসবার পর। মাকককাণ্ডে এনসিবির হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন সুশান্তের গার্লফ্রেন্ড। আপতত জামিনে মুক্ত রিয়া, তবে সুশান্তের ফ্ল্যাট মেট তথা ক্রিয়েটিভ ম্যানেজার সিদ্ধার্থ পিঠানি মাদক মামলায় এখনও জেলবন্দি। মৃত্যুর দিন সিদ্ধার্থ পিঠানিই সুশান্তের দেহ প্রথম দেখেন বলে পুলিশ রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, এমনকি পিঠানি সুশান্তের দেহ নীচে নামিয়েছিল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.