রবিবার রাত থেকে মেঘভাঙা বৃষ্টি এবং ধসের জেরে হিমাচল প্রদেশের জনজীবন বিপর্যস্ত। ভারী বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি এবং ধসের কারণে চার দিনে হিমাচল প্রদেশে মারা গিয়েছেন অন্তত ৬০ জন। মঙ্গলবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ৫৮। শিমলায় ধসের কারণে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর পাওয়ার পর পর্যবেক্ষণ করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। ধসপ্রবণ এলাকায় ঘরবাড়ি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ধসের কারণে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মেরামতের দায়িত্ব সরকার নেবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ধস নামার কারণে কালকা থেকে শিমলা যাওয়ার রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে মঙ্গলবার রাতে শিমলায় বৈঠকে বসেছিলেন। হিমাচলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি স্কুল, কলেজ বুধবার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখা হতে পারে বলেও প্রশাসন সূত্রে খবর।
সোমবারের প্রবল বৃষ্টি এবং হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে শিমলার সামার হিলের শিব বাওয়ারি মন্দির। বহু ভক্ত মন্দিরের তলায় চাপা পড়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ১১টি দেহ উদ্ধার হয়েছে। প্রশাসন জানাচ্ছে, ধসের সময় অন্তত ৩০ জন ভক্ত এবং পুণ্যার্থী মন্দিরের ভিতরে ছিলেন।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, হিমাচল প্রদেশের পাশাপাশি উত্তরাখণ্ডেও আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দুই রাজ্যের বিক্ষিপ্ত এলাকায় লাল সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। এর প্রভাব দেখা যেতে পারে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতেও। অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, অসম, মণিপুর, মিজোরাম, ত্রিপুরায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া ওড়িশা, আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের বিক্ষিপ্ত এলাকায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে মৌসম ভবন সূত্রে খবর।
কিন্তু হিমালয়ের পাদদেশের রাজ্যগুলিতে কেন এত বৃষ্টি হচ্ছে? মৌসম ভবনের প্রধান এম মহাপাত্র এই বিষয়ে জানিয়েছেন, বর্ষার সময় তৈরি হওয়া নিম্নচাপ অঞ্চল স্বাভাবিক অবস্থানের তুলনায় উত্তরে রয়েছে। এখন হিমালয়ের পাদদেশে রয়েছে সেই নিম্নচাপ অঞ্চল। অনুমান, সে কারণেই হিমাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে অনবরত ভারী বৃষ্টি হয়ে চলেছে।