ডাক্তারের তকমা হারাবেন সন্দীপ? বৈঠকে মেডিক্যাল কাউন্সিল, অধিকাংশের সায়, বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত

আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার দুপুরেই আলোচনায় বসেছিল পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিল। বৈঠক সূত্রে খবর, সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের পক্ষেই মত উঠে এসেছে আলোচনায়। যদিও মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও কিছু জানানো হয়নি। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে মন্তব্য করতে পারে কাউন্সিল। উল্লেখ্য, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি পদে বর্তমানে রয়েছেন তৃণমূলের চিকিৎসক নেতা সুদীপ্ত রায়। তিনি শ্রীরামপুরের বিধায়ক। সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের জন্য চাপ এসেছে তাঁর উপরেও।

চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র রাজ্য শাখার তরফে মঙ্গলবারই মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতিকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। চিঠিটি সুদীপ্তকে অনুরোধ করা হয়েছিল যাতে ‘ব্যক্তিগত সম্পর্ক’ না দেখে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ওই চিঠিতে সই ছিল তৃণমূলের অপর এক চিকিৎসক নেতা শান্তনু সেনেরও। উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের পর শান্তনু প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। এমনকি শান্তনুর স্ত্রী-কন্যাকেও আরজি করের আন্দোলনকারীদের সমর্থনে নামতে দেখা গিয়েছিল।

গত ২ সেপ্টেম্বর আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পাঁচ দিন পরে সন্দীপকে শোকজ় করেছিল রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। গত ৭ সেপ্টেম্বর সেই চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়েছিল, ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর দিতে হবে। যদি তা দেওয়া না হয়, কিংবা সন্তোষজনক উত্তর না মেলে, তা হলে সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। মেডিক্যাল কাউন্সিলের ব্যাখ্যা ছিল, কোনও চিকিৎসকের রেজিস্ট্রেশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বাতিল করতে হলে দু’টি কারণে তা করা সম্ভব। এক, কেউ যদি কোনও অপরাধমূলক কাজের চক্রান্ত কিংবা তাতে সরাসরি যুক্ত থাকার অপরাধে আদালতে দোষী প্রমাণিত হন এবং দুই, কোনও অপরাধমূলক কাজে নাম জড়ানোর ফলে জনসমাজে যদি তাঁর বদনাম হয়ে থাকে। তবে দু’টি ক্ষেত্রেই শোকজ় না করে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা নিয়মবিরুদ্ধ। তাই সন্দীপকে শোকজ় করা হয়েছিল।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এই অবস্থায় শোকজ়ের উত্তর না পাওয়ার পরেও কেন সন্দীপের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র রাজ্য শাখা। বুধবার সকালেই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল কাউন্সিলের সভাপতি তথা শাসকদলের বিধায়ক সুদীপ্তকে। তিনি অবশ্য বক্তব্য ছিল, “আমি একা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।” তবে সকালেই তিনি জানিয়েছিলেন যে কোনও সময়ে কাউন্সিলের বৈঠক হবে এবং সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর পর বুধবার দুপুরেই বৈঠকে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.