সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে বিচ্ছিন্ন ভারত-বাংলাদেশ! উদ্বেগ বাড়ছে কাঁটাতারের দু’পারেই

ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে সড়ক, রেল এবং আকাশ পথে যোগাযোগ আপাতত বন্ধ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভারতের সীমান্ত। সোমবার রাত ১১টা পর্যন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও। গত কয়েক দিন ধরেই ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে সমস্ত ট্রেন বন্ধ রয়েছে। বন্ধ ছিল বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে বাস পরিষেবাও। ফলে সোমবার দুপুরের পর থেকে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতের আর কোনও পথই খোলা নেই। যা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে কাঁটাতারের দু’পারের মানুষকে।

ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ সীমান্তে আটকে পড়েছে ভারতে আসার শ’তিনেক মালবাহী ট্রাক। বিভিন্ন সূত্রে খবর, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বহু পরিবারই সেখানে নিরাপত্তার অভাববোধ করছেন। সীমান্ত পেরিয়ে এ পার বাংলায় আসতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু চাইলেও আপাতত ফেরার উপায় নেই। ইতিমধ্যেই ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এলপিএআই) পেট্রাপোল সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। যার ফলে বাণিজ্য পরিবহণ বন্ধ তো হয়েছেই। বন্ধ রয়েছে যাত্রী পরিবহণও। সোমবার এয়ার ইন্ডিয়া-সহ ভারতের বহু বিমান পরিবহণ সংস্থা বাংলাদেশে বিমান পরিষেবা আপাতত বন্ধ করেছে। তা ছাড়া শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বন্ধ থাকায় বিমান পরিষেবা চালু রাখা সম্ভবও ছিল না।

অন্য দিকে, সোমবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জারি করা হয়েছে ‘হাই অ্যালার্ট’। সীমান্তরক্ষী বাহিনী তথা বিএসএফের তরফে ভারত-বাংলাদেশের ৪০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সীমান্তে নিরাপত্তা জোরালো করা হয়েছে। বিএসএফের তরফে ওই এলাকার সমস্ত জওয়ানকে সীমান্তে পৌঁছনো এবং সতর্ক প্রহরায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে বিএসএফের ডিরেক্টর জেনারেল (কার্যবাহী) দলজিৎ সিংহ চৌধুরী স্বয়ং পশ্চিমবঙ্গে এসে সীমান্ত এলাকাগুলি ঘুরে দেখেন। এমনকি, উত্তর ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকাতেও সফর করেন তিনি।

উল্লেখ্য ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্য। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত ২২১৭ কিলোমিটারের। ত্রিপুরার সঙ্গে ৮৫৬ কিলোমিটার, অসমের ২৬২ কিলোমিটার এবং মিজোরামের ৩১৮ কিলোমিটার। এই সীমান্ত জুড়ে বিএসএফ ৮৭ ব্যাটেলিয়ন বাহিনী অর্থাৎ প্রায় ৯০ হাজার জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে, ওই সমস্ত সীমান্ত এলাকার সেনাকর্মীদের ছুটি।

ভারত থেকে বাংলাদেশে রেল পথে অনেকগুলি ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস। এই ট্রেন পরিষেবা বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্য আগেই বন্ধ করা হয়েছিল। এ ছাড়া শিলিগুড়ি, কলকাতা, দুর্গাপুর, আগরতলা-সহ বিভিন্ন শহর থেকে বাংলাদেশে যে বাস পরিষেবা চালু ছিল তা-ও বন্ধ রয়েছে ক’দিন ধরেই। আপাতত সেই সব পরিষেবাও চালু হওয়ার ব্যাপারে অনিশ্চিত কাঁটাতারের দু’তরফের মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.