প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গ্রেফতারির সঙ্গে আবারও উঠে এলো প্রতিবাদী বরুণ বিশ্বাসের হত্যা মামলা। মন্ত্রী গ্রেফতার হতেই বিস্ফোরক বরুণ বিশ্বাসের দাদা ও বাবা। বরুণ বিশ্বাসের হত্যার পিছনে রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই, এমনই জানালেন বরুণ বিশ্বাসের বাবা।
বরুণের বাবা জগদীশ বিশ্বাস বললেন, “জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ফাঁসি চাই।” বরুণের মৃত্যুর তদন্ত কার্যত হয়নি বলেও অভিযোগ করেন বরুণের দাদা অসিত বিশ্বাস। তিনি তাঁর ভাইয়ের মৃত্যু মামলায় নতুন করে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সিবিআই তদন্ত করলেই, প্রকৃত সত্য জানা যাবে। বেরিয়ে আসবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আসল রূপ। দাবি অসিত বিশ্বাসের।
বরুণ খুন হয়েছেন ১১ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও ভিটেমাটিতে থাকতে পারেন না বরুণের বাবা। ঘরে ছেলের স্মৃতি ভর্তি। তিনি বললেন, ওই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকই আমার বরুণকে খুন করেছে। সেই কথা আমার বড় মেয়ে বলেছিল বলে, ওর নামেও মানহানির মামলা করে দিয়েছে। কথাগুলি বলতে গিয়ে শব্দ আটকে যাচ্ছিল তাঁর। একে বয়সের ভার, সঙ্গে সন্তান হারানো শোক। তিনি কেঁদেই ফেললেন। বললেন, “আমি একটাই কথা বলব, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের যেন ফাঁসি হয়। আমার এটাই শেষ ইচ্ছা। আর বেশি দিন আমি থাকব না, কিন্তু এটাই বলে যাব জ্যোতিপ্রিয়র যেন ফাঁসি হয়।”
পাশেই বসেছিলেন বরুণের দাদা। তিনি বলেন, “জ্যোতিপ্রিয়র সাঙ্গপাঙ্গরা গোবরডাঙা, ঠাকুরনগর, সুটিয়া এক সঙ্গে মিলিত হয়ে বরুণকে খুন করেছে। এটা এক জনের পক্ষে সম্ভব নয়। সিআইডি এই মামলার তদন্ত করতে পারবে না। বরুণ বিশ্বাসের মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্ত হোক। এটা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন।”
পাশে বসে কেঁদেই চলেছেন বরুণের বাবা। তিনি বললেন, “যে বন্দুকটা দিয়ে গুলি করা হয়েছিল, সেটাও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সরিয়ে ফেলেছিল। যাতে প্রমাণ না থাকে। একজন বাবা হয়ে বেঁচে আছি, সন্তান হারিয়ে এর থেকে বড় শোক আর কী হতে পারে। তবে সত্যের জয় হবেই। এখনও শাসক দলের আতঙ্কে সুটিয়ার বাড়িতে থাকতে পারেন না বরুণের পরিবার। কলকাতাতেই থাকেন বরুণের বাবা। জ্যোতিপ্রিয় গ্রেফতারের পর নতুন করে আশার আলো দেখছেন তাঁরা। একটাই দাবি, ‘জ্যোতিপ্রিয় ফাঁসি চাই।’
জ্যোতিপ্রিয়র গ্রেফতারিতে নতুন করে বরুণ বিশ্বাসের মামলা প্রাণ পেতে পারে বলে মনে করছে পরিবার। বিজেপির তরফে বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার বলেন, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মদতেই বরুণকে খুন করা হয়েছিল। এই ঘটনা আপামোর গাইঘাটা সহ গোটা জেলার মানুষ জানে। ক্ষমতার বলে সিআইডিকে অন্য দিকে পরিচালনা করেছে প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আমরাও চাই, বরুণ বিশ্বাসের মামলার সিবিআই তদন্ত হোক।”