ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় গাজ়ায় ফোন এবং ইন্টারনেট বিচ্ছিন্ন! ইজ়রায়েলকে ‘পূর্ণ শক্তি’ দিয়ে আটকানোর অঙ্গীকার হামাসের

ইজ়রায়েলকে ঠেকাতে সে দেশের বাহিনীর উপর ‘সম্পূর্ণ শক্তি’ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা জানাল প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। অন্য দিকে, হামাসকে ঠেকাতে গাজ়া ভূখণ্ডে আরও বাহিনী বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বাহিনীও। শুক্রবার রাতেই ইজ়রায়েলি বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্রের হামলায় গাজ়া ভূখণ্ডে ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ইজ়রায়েলের সেনা বাহিনীর দাবি, টানা দু’রাত গাজ়ার উপর ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণ করেই চলেছে তারা। পাশাপাশি, সাঁজোয়া গাড়ি দিয়েও চালানো হচ্ছে হামলা।

একই সঙ্গে গাজ়া ভূখণ্ডে সুড়ঙ্গের ডেরা থেকে হামাস যোদ্ধাদের উৎখাত করতে নয়া পরিকল্পনা করেছে ইজ়রায়েল সেনা। আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের দাবি, ভূমধ্যসাগর থেকে বিপুল পরিমাণ জল ঢুকিয়ে সুড়ঙ্গে আত্মগোপনকারী হামাস বাহিনীকে বাইরে আনার একটি নকশা তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রায় ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ গাজ়া উপকূলের একাংশ ইজ়রায়েল নৌসেনার দখলে রয়েছে। সেখান থেকেই হতে পারে এই ‘জল ভরো’ অভিযান।

ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনী ‘আইডিএফ’-এর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনের ধারাবাহিক হামলার পর, ইজ়রায়েলি সেনা শুক্রবার রাত থেকেই গাজ়া ভূখণ্ডে সশস্ত্র অভিযান আরও জোরদার করে তুলেছে।’’

গাজ়ার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় তারা ইজ়রায়েলি সেনার সঙ্গে লড়াই করছে বলে জানিয়েছে প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠীও। হামাসের সশস্ত্র শাখা এজেদিন আল-কাসাম শুক্রবার জানিয়েছে, ‘‘আমরা বেইত হানুন (গাজ়া উপত্যকার উত্তরের এলাকা) এবং পূর্ব বুরেজে ইজ়রায়েলি আগ্রাসনের মোকাবিলা করছি।’’

ইজ়রায়েল সরকারের হিসাব অনুযায়ী হামাসের সঙ্গে সংঘাতে সে দেশের ১৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্য দিকে, হামাসের দাবি, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইজ়রায়েলি বাহিনীর হানায় গাজ়া ভূখণ্ডে মোট ৭,৩২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই সাধারণ নাগরিক এবং শিশু বলে দাবি করেছে প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠী। হামাসের তরফে, মৃতদের নামতালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ইজ়রায়েলের সেই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর প্যালেস্তাইনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইজ়রায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে হামলা চালায়। সেই হামলায় বহু ইজ়রায়েলি নাগরিকের মৃত্যু হয়। অনেককে পণবন্দি করে নিয়ে যায় হামাস। অতর্কিত এই হামলার পরেই হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন নেতানিয়াহু। তার পর থেকে ইজ়রায়েলের প্রত্যাঘাতে মৃত্যুমিছিল দেখছে গাজ়া। যুদ্ধে আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দেশগুলি ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভারতকেও পাশে পেয়েছে ইজ়রায়েল। তবে হামাসকে সহযোগিতা করছে পশ্চিম এশিয়ার শক্তিশালী দেশ ইরান। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হেজ়বুল্লাও হামাসের সমর্থনে অস্ত্র ধরে ইজ়রায়েলে হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.