২০শে সেপ্টেম্বর হোক পশ্চিমবঙ্গ মাতৃভাষা দিবস : ডঃ মোহিত রায়

“পশ্চিমবঙ্গে গত কয়েক দশকের দ্রুত ইসলামিকরণের ফলে আঘাত শুরু হয়েছে বাংলা ভাষার উপরও। আজকের বামপন্থী, ধর্মনিরপেক্ষ বুদ্ধিজীবী ও তৃণমূল কংগ্রেসের ইসলামী মৌলবাদী তোষণের পশ্চিমবঙ্গ ক্ৰমশঃ হয়ে উঠছে পশ্চিম বাংলাদেশ— জনসংখ্যা, সংস্কৃতি ও বাংলা ভাষার বিকৃতিতে। দাড়িভিট হত্যাকাণ্ড এই ইসলামী আগ্রাসনের একটি শিলা ফলক বা মাইল স্টোন।“

এই মন্তব্য করলেন বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য তথা উদ্বাস্তু কমিটির আহ্বায়ক ডঃ মোহিত রায়। তাঁর বক্তব্য, “উত্তর দিনাজপুর জেলার দাড়িভিট গ্রামের স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ বাঙ্গলা ভাষার জন্য ২০১৮ সালের ২০শে সেপ্টেম্বর রাজ্য সরকারে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন। দাড়িভিট হাইস্কুলে ছাত্রছাত্রীদের দাবী ছিল বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের। এই স্কুলে উর্দুভাষী কোন ছাত্রছাত্রী নেই। স্থানীয় মুসলিম তৃণমূল নেতার তৎপরতায় সরকারের বিদ্যালয় দপ্তর পাঠালো বাংলা ও বিজ্ঞান শিক্ষকের জায়গায় উর্দু শিক্ষক এবং সংস্কৃত শিক্ষক। অবাঞ্ছিত উর্দু শিক্ষকের নিয়োগকে একটু সহনশীল করার জন্য সম্ভবতঃ সংস্কৃত শিক্ষককের নামটাও যুক্ত করা হয়েছিল। ছাত্ররা মানে নি, প্রতিবাদ করেছিল। প্রতিবাদ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। অতএব পুলিশ সামান্য উত্তেজনাতেই গুলি এবং দুই প্রাক্তন ছাত্র রাজেশ সরকার এবং তাপস বর্মনের মৃত্যু।“

দাড়িভিট স্কুলে কি এমন হয়েছিল যে পুলিশ গুলি চালায় ? এই প্রশ্ন তুলে তিনি অভিযোগ করেন, “দাড়িভিট স্কুলের বিক্ষোভে ছিল ছাত্র ও ছাত্রীরা। কিছু গ্রামবাসী। কারো কাছে কোন অস্ত্র ছিল না, কোন বোমাও ফাটে নি। পুলিশও সে দাবী করে নি। কিছু ঢিল ছোড়া হতেই পারে। তবু পুলিশ গুলি চালালো কেন ? কালিয়াচক, ধুলাগড় বা ভাঙ্গর – এইসব হিংসাত্মক ইসলামী বিক্ষোভে পুলিশ মার খেয়েও কোথাও গুলি চালায় নি। কারণ পুলিশ জানে যে তৃণমূল জমানায় পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের মারলে কাউকে কোন কৈফিয়ৎ দিতে হবে না। সুতরাং তারা নিরীহ হিন্দু ছাত্রদের উপর গুলি চালাতে তাদের বাধে নি। এভাবে বিদ্যালয় চত্বরে ছাত্র হত্যা পশ্চিমবঙ্গে স্মরণকালে হয় নি।“

মোহিতবাবুর মতে, “দাড়িভিটের প্রতিবাদ জন্ম দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব ভাষা আন্দোলন। দাড়িভিট আমাদের সুযোগ দিয়েছে বাংলা ভাষা ও বাঙালির নতুন পরিচয়কে সবার সামনে তুলে ধরতে। বাংলাভাষী হলেই সে বাঙ্গালী হয় না, তাঁকে পাঁচ হাজার বছরের ভারতীয় সংস্কৃতির উত্তরাধিকার স্বীকার করতে হয়। দাড়িভিটের ঘটনা থেকে শুরু হতে পারে রাজ্য জুড়ে মাদ্রাসা বন্ধের আন্দোলন, মাদ্রাসায় আরবি শিক্ষা বন্ধের আন্দোলন। ২০শে সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ মাতৃভাষা দিবস।“

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.