রিকবোর টিউবওয়েল খারাপ হয়ে গিয়েছে। যে দুটো ভালো আছে তা থেকেও হলুদ জল বের হচ্ছে। ফলে ডায়না নদীর জলই খাচ্ছে মালবাজার মহকুমার নাগরাকাটা ব্লকের লুকসান গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার লালঝামেলা বস্তির বাসিন্দারা। এ ঘটনায় ব্যপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি ডায়না নদীর জল খেয়ে পেটের নানা রোগে ভুগছে গ্রামবাসীরা। আবার সেই জল নিয়ে আসতে গিয়ে নানা সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
তাই গ্রামবাসীদের দাবি, দ্রুত পিএইচই-র মাধ্যমে জল সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করুক প্রশাসন। যদিও দ্রুত সমস্যার মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। যদিও নাগরাকাটা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, ওই এলাকায় যেখানে জল নেই রিকবোর টিউবওয়েল বসানো কাজ দ্রুতই শুরু হবে। কারণ টেন্ডার ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এলাকার বাসিন্দা তথা লুকসান গ্রামপঞ্চায়েত এর সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য সুমিত্রা মিঞ্জ বলেন, জলকষ্ট আমাদের আজ নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে সকলকে। আমরা বহুবার বলেছি কিন্তু স্থায়ী সমাধান কখনওই হয়নি।
স্মিতা রাই,গোমা প্রধানরা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা লালঝামেলা বস্তির বাসিন্দারা জলকষ্টে ভুগছি। প্রশাসনের পক্ষ বেশ কয়েকটি রিকবোর টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। কিন্তু প্রায় সব গুলোই খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে। মাত্র দুটি টিউবওয়েল ভালো আছে কিন্তু তা থেকেও হলুদ জল বের হচ্ছে। তাও আবার এতটা কম জল বের হচ্ছে যে এক বালতি জল ভরতে অনেকটা সময় নিচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা সুদুর ডায়না নদী থেকে জল নিয়ে আসতে হচ্ছে। বাড়ির সমস্ত কাজই করা হচ্ছে ডায়না নদীর জল দিয়ে। জল নিয়ে আনতে গেলেও মাঝে মধ্যে হাতির সামনে পড়তে হচ্ছে অনেককেই।
এলাকার আরেক বাসিন্দা দিবস শর্মা বলেন, লালঝামেলা বস্তি পিকনিক স্পটের পাশাপাশি বহু পর্যটক এখানে বেড়াতে আসে। রিসোর্টও আছে কিন্তু জল নেই তাই কেউই এখানে এলে থাকে না। দিনে এসে দিনেই ঘুরে চলে যায়। জলের ব্যবস্থা না থাকাতে প্রচুর সমস্যায় আছি আমরা। এলাকার আদিবাসী উন্নয়ন মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক বলেন, আমার এই খবর জানা নেই, আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। লাল ঝামেলা বস্তিতে ট্রাইবেলদের বসবাস। আমিও ট্রাইবল মিনিষ্টার। দ্রুত খোঁজ নিচ্ছি। এব্যাপারে সমস্ত দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে আগামীকাল ওই এলাকায় গিয়ে খোজ খবর নেব।
উল্লেখ্য, নাগরাকাটা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত ভারত ভুটান সীমান্তের এই গ্রামটিতে প্রায় ৫হাজার পরিবার বসবাস করে। এই এলাকাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১০০০ ফুট উচুতে রয়েছে। তাই এখানে পাত কুয়ো বলে কিছুই নেই এই গ্রামে। তাই প্রায় বেশ কয়েক বছর আগে স্বজলধারা প্রকল্পের মাধ্যমে একটি রিজার্ভার বসিয়ে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সেটা পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এরপর প্রায় এলাকায় নয়টি রিকবোর টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। তার মধ্যেও পরিচর্যার অভাবে সাতটি রিকবোর টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে জানা গেছে।