একের পর এক পেজার বিস্ফোরণে তছনছ লেবানন। একই সঙ্গে লেবাননের বিভিন্ন জায়গা এবং সিরিয়াতেও পেজার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এই হামলায় অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা চার হাজার ছুঁইছুঁই। হাসপাতালগুলোতে তিলধারণের জায়গা নেই। চারপাশে শুধুই হাহাকার।
পেজার হামলার নেপথ্যে ইজ়রায়েলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে ইরানের মদতপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লা। সরকারি সূত্রে খবর, এই হামলায় হিজ়বুল্লার একাধিক সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের তালিকায় রয়েছে এক কিশোরীও। ইরানের রাষ্ট্রদূত আহত হয়েছেন এই হামলায়, খবর সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে। পেজার হামলার দায় ইজ়রায়েলের চাপিয়ে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে হিজ়বুল্লা। তবে এই হামলা সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত ইজ়রায়েলের তরফে কোনও বিবৃতি আসেনি।
পেজার কী? পেজার হল যোগাযোগ মাধ্যমের অন্যতম একটি ডিভাইস। মোবাইল ফোনের বিকল্প হিসাবে পেজারের ব্যবহার হয়ে থাকে। সাধারণত বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী এই ডিভাইস ব্যবহার করে। লোকেশন ট্র্যাক করা যায় না এই পেজারে। হাতে বা পকেটে করে পেজার নিয়ে ঘোরা যায়। সেই পেজারের মধ্যেই বিস্ফোরক রেখে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে খবর।
সমাজমাধ্যমে এই হামলার পরের বেশ কিছু ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, লেবাননের রাজধানী এবং তার সংলগ্ন এলাকার রাস্তায় পড়ে শয়ে শয়ে মানুষ। কারও হাত উড়েছে, কারও আবার পা। কেউ আবার চোট পেয়েছেন মাথায়। পরিজনদের খোঁজে উদ্ভান্তের মতো চারপাশ দৌড়তেও দেখা যাচ্ছে মানুষজনকে। সামান্য সময়ের পর পর বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত লেবানন এবং সিরিয়ার বিস্তীর্ণ জনজীবন।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ইরানের মাটিতে হামাস শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়া এবং ইজ়রায়েলি হানায় হিজবুল্লার সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কমান্ডার নামেহ নাসেরের মৃত্যুতে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি আরও তপ্ত হয়েছে। তার পর থেকে ইজ়রায়েল এবং হিজ়বুল্লার মধ্যে ছোট-বড় সংঘর্ষ লেগেই রয়েছে। কখনও রকেট হামলা, কখনও আবার ড্রোন দিয়ে আক্রমণ— দু’পক্ষের হামলায় উত্তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। সেই সঙ্গে ইরানও বিভিন্ন ছক কষছে ইজ়রায়েলের উপর হামলা চালানোর। সেই আবহেই ঘটল পেজার বিস্ফোরণ।