তিনটি বিশ্বরেকর্ড করল হাওড়ার ১৭ বছরের মেয়ে কোয়েল বর। মঙ্গলবার অহমদাবাদে ভারোত্তোলনের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করে বঙ্গের কোয়েল।
মোট ১৯২ কেজি ওজন তুলে যুব ভারোত্তোলনে বিশ্বরেকর্ড করে কোয়েল। সেই সঙ্গে জিতে নেয় সোনাও। যুব ভারোত্তোলনে ৫৩ কেজি বিভাগে আগের বিশ্বরেকর্ড ছিল ১৮৮ কেজি। কোয়েল সহজেই তা ভেঙে দেয়। ক্লিন অ্যান্ড জার্ক বিভাগে ১০৭ কেজি ওজন তোলে কোয়েল। এই বিভাগে বিশ্বরেকর্ড ছিল ১০৫ কেজি। স্ন্যাচে ৮৫ কেজি ওজন তুলে বিশ্বরেকর্ড স্পর্শ করে কোয়েল।
হাওড়ায় মুরগির মাংস বিক্রেতার মেয়ে কোয়েল ইউথ ছাড়াও জুনিয়র বিভাগেও সোনা জেতে। রেকর্ডের হ্যাটট্রিক, জোড়া সোনা। তার পরেও নির্বিকার কোয়ল বলে, “বিশ্বরেকর্ড করাই আমার লক্ষ্য ছিল। অনুশীলনের সময়ে ১০৭-১০৮ কেজি ওজন আমি নিয়মিত তুলেছি। ফলে, বিশ্বরেকর্ডের কাছাকাছি ছিলামই। রেকর্ড হতই। আমি ১০৯ কেজি তুলতে পারতাম। কিন্তু অল্পের জন্য পারলাম না।”
কী ভাবে এই সাফল্য এল তা বলতে গিয়ে কোয়ল বলে, “বাবাকে দেখে ২০১৮ সালে ভারোত্তোলন শুরু করি। বাবা নিয়মিত জিমে যেত। বিজয় স্যারের (বিজয় শর্মা, কোয়েলর প্রশিক্ষক) কাছে প্রশিক্ষণ নিয়ে গত দু’বছরে আমার পারফরম্যান্সে অনেক উন্নতি হয়েছে। আগে সব মিলিয়ে ১৪৭ কেজি তুলতে পারতাম। এখন ১৯২ কেজি তুলছি।”
বিজয়, যিনি এখন ভারতীয় দলের প্রধান কোচ, বলেন, “কোয়েলকে আমার বরাবরই শারীরিক ভাবে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘকালীন লক্ষ্যে বেশ কয়েক জন খুদেকে নিয়ে কাজ করছিলাম। তখনই কোয়েল আমার নজরে পড়ে। প্রথমেই অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে ওর টেকনিকের উপর জোর দিয়েছিলাম। বাচ্চাদের কী করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তার জন্য অলিম্পিক্স গোল্ড কোয়েস্ট খুবই সাহায্য করছে।”
কোয়েলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘‘আমাদের বাংলার ঘরের মেয়ে, হাওড়ার বাসিন্দা কোয়েল বর আহমদাবাদে অনুষ্ঠিত ভারোত্তোলনের কমনওয়েলথ চ্যাম্পিয়নশিপে বিশ্বরেকর্ডের হ্যাটট্রিক করে জোড়া সোনা জিতে বাংলাকে গর্বিত করেছে। আমি ওকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ভালোবাসা জানাই।’’

শুধু কোয়েলই নয়, রাজ্যের মুখ উজ্জ্বল করেছে অনীক মোদিও। ছেলেদের যুব ৬৫ কেজি বিভাগে মোট ২৩৮ কেজি ভারোত্তোলন করে সোনা জিতেছে অনীকও।

