পা দিয়ে তির ছুড়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিশ্বরেকর্ডের দোরগোড়ায়, প্যারালিম্পিক্সে চর্চায় হাত না থাকা শীতল

তাঁর জেদ এবং পরিশ্রমের উদাহরণ আগেই দেখেছে বিশ্ব। প্যারা এশিয়ান গেমসে তিনটি সোনা, একটি রুপো জিতে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন প্যারা তিরন্দাজ শীতল দেবী। হাত নেই। পা দিয়ে তির ছুড়েই স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন। এ বার তাঁর লক্ষ্য আরও উঁচুতে। প্যারিস প্যারা অলিম্পিক্সে সোনা জিততে কঠোর পরিশ্রম করছেন তিনি। হয়ে গিয়েছেন বিশ্বের এক নম্বর প্যারা তিরন্দাজ। বৃহস্পতিবার বিশ্বরেকর্ডও গড়ে ফেলতেন। অল্পের জন্য তা হল না।

শীতল প্যারা অলিম্পিক্সে কম্পাউন্ড ইভেন্টের ব্যক্তিগত বিভাগে ৭০৩ পয়েন্ট পেয়েছেন। কিন্তু তিনি দ্বিতীয় স্থানে শেষ করেছেন। শীর্ষে রয়েছেন চিনের ওজনুর গিরডি। তিনি ৭০৪ পয়েন্ট পেয়েছেন। ফলে বিশ্বরেকর্ড এখন তাঁর দখলে। এর আগে এই বিভাগে বিশ্বরেকর্ড ছিল গ্রেট ব্রিটেনের ফিবি পাইন প্যাটেরসন। তিনি এই বছরই ৬৯৮ পয়েন্ট স্কোর করেছিলেন। সেই রেকর্ড ভেঙে গেল প্যারিস প্যারা অলিম্পিক্সের র‍্যাঙ্কিং রাউন্ডে।

জন্ম থেকেই বিরল রোগ ‘ফোকোমেলিয়া’য় আক্রান্ত শীতল। ফলে বেড়ে ওঠেনি হাত। কিন্তু তাতেও দমে যাননি জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ারের লোইধার গ্রামের তিরন্দাজ। চিনে আয়োজিত প্যারা এশিয়ান গেমসে পা দিয়ে তির ছুড়ে সোনা জিতেছিলেন শীতল। এশিয়ান গেমসের একটি সংস্করণে দু’টি বা তার বেশি স্বর্ণপদক জয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা শীতল। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। গত বছর প্যারা এশিয়ান গেমসে মহিলাদের ডাবলসে রুপো এবং মিক্সড ডাবলসে সোনা জিতেছিলেন শীতল।

মাত্র দু’বছর আগেই তির-ধনুক নিয়ে অনুশীলন শুরু করেছিল শীতল। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শীতল বলেছিলেন, “প্রথম দিকে ধনুক ধরতেই পারতাম না। পরে অনুশীলন করার পর ঠিক হয়েছে। আমার বাবা-মা কখনও আমার উপর বিশ্বাস হারাননি। আমার বন্ধুরাও আমাকে অনেক সমর্থন করেছে।” শীতল আরও বলেছিলেন, “একটি বিষয়ই আমার পছন্দ নয়। তা হল আমার হাত নেই বলে সবাই যখন বিশেষ দৃষ্টিতে আমায় দেখেন। তাঁদের ভুল প্রমাণ করার জন্যই পদক জিততে চাই। এই সব পদক শুধু আমার নয়, গোটা দেশের।”

ব্যাডমিন্টনে মনোজ সরকার হেরে গিয়েছেন নীতেশ কুমারের বিরুদ্ধে। গ্রুপ পর্বে একে অপরের বিরুদ্ধে ম্যাচ ছিল তাঁদের। নীতেশ জিতেছেন ২১-১৩, ১৮-২১, ২১-১৮ ফলে। সিঙ্গলস এসএল ৩ ইভেন্টে রয়েছেন তাঁরা। ব্যাডমিন্টনে সিঙ্গলস এসএল ৪-এ সুহাস ইয়াতিরাজ জিতেছেন ইন্দোনেশিয়ার হিকমত রামদানির বিরুদ্ধে। তিনি জিতেছেন ২১-৭, ২১-৫ গেমে। জিতেছেন সুকান্ত কদম এবং তরুণ ঢিলনও। সিঙ্গলস এসএইচ ৬ বিভাগে হেরেছেন শিবরাজন সোলাইমালাই।

ব্যাডমিন্টনে মেয়েদের বিভাগে জিতেছেন পালক কোহলি, তুলাসিমতি মুরুগেসন, মনীষা রমাদাস এবং নীত্য শ্রী সিভন। হেরে গিয়েছেন মানসী জোশী এবং মনদীপ কউর। মিক্সড ইভেন্টে জিতেছেন নীতেশ এবং মুরুগেসন। তবে হেরে গিয়েছে ইয়াতিরাজ এবং পালকের জুটি। হেরে গিয়েছেন নীত্য এবং শিবরাজনও।

সাইক্লিংয়ে জ্যোতি গাদেরিয়া দশম স্থানে শেষ করেছেন। মেয়েদের ৩০০০ মিটার সাইক্লিংয়ে তিনি সময় নিয়েছেন ৪ মিনিট ৫৩.৯২৯ সেকেন্ড। তায়কোন্ডোতে প্রথম রাউন্ডে হেরে বিদায় নিয়েছেন অরুণা তানওয়ার। তুরস্কের নুরচিহান একিনচির বিরুদ্ধে তিনি হেরেছেন ০-১৯ স্কোরে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.