আরজি কর-কাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসল কলকাতা পুলিশ। মহিলাদের সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা নিয়ে একাধিক পদক্ষেপের কথা জানিয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল। অপরাধপ্রবণ এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি করা থেকে শুরু করে সরকারি হাসপাতাল, হোম এবং মহিলা হস্টেলের নিরাপত্তা আঁটসাঁট করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চার তলার সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার কী ভাবে সকলের নজর এড়িয়ে হাসপাতালের চার তলায় উঠে গেলেন এবং ওই চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও প্রশ্নের মুখে। ঘটনার পর থেকেই দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বিক্ষোভকারীদের দাবি, আরজি করের মতো সরকারি হাসপাতালেই মহিলা চিকিৎসকেরা সুরক্ষিত নন। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিতে সরব তাঁরা।
ঘটনার পরই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিনীত। পরে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি দাবি করেন, অপরাধী যেই হোক না কেন, কোনও ভাবেই ছাড় পাবেন না। তিনি বার বার একই কথা বলেছেন, “আমাদের কাছে ওই ব্যক্তি সর্বোচ্চ পর্যায়ের অপরাধী। তিনি যা-ই হোন না কেন, আমাদের কাছে তাঁর পরিচয়— তিনি এক জন অপরাধী।” পাশাপাশি, মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়ও পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার।
কমিশনারের তরফে জানানো হয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডের পর শহরে মহিলাদের সুরক্ষার বিষয় নিয়ে আরও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতিতে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই প্রধান কাজ। সেই কারণে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, অপরাধপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করতে হবে। মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ বাঞ্ছনীয়। পুলিশের টহলদারি বৃদ্ধি করতে হবে এলাকায় এলাকায়।
পাশাপাশি, সিসি ক্যামেরার নজরদারি বৃদ্ধির ব্যাপারে জোর দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। তাঁর নির্দেশ সিসি ক্যামেরা নেই এমন জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে পর্যাপ্ত ক্যামেরা বসানোর কাজ করতে হবে। সরকারি হাসপাতাল, হোম এবং মহিলা হস্টেলের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশও দিয়েছেন বিনীত। এ ছাড়াও, মহিলাদের সুরক্ষার বার্তা সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ। স্কুল-কলেজের ছাত্রী থেকে মহিলা চিকিৎসক— সকলের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। এই জন্য যত বেশি সংখ্যক মানুষের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব, তা করতে হবে। সুরক্ষার বিষয়ে কোথায় কোথায় ফাঁক রয়েছে, তা খুঁজে বার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে হবে।