বিধ্বংসী আগুন পুনের সিরাম ইন্সস্টিউটে, এই সিরাম ইন্সস্টিটিউটেই তৈরি হচ্ছে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন

বিধ্বংসী আগুন পুনের সিরাম ইন্সস্টিউটে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই সিরাম ইন্সস্টিটিউটেই তৈরি হচ্ছে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন। যা এখন গোটা ভারতের জন্য রীতিমতো অক্সিজেন-সম। আর সেই ভ্যাকসিনের কারখানাতেই আগুন লাগায় রীতিমতো দুশ্চিন্তা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে ভ্যাকসিন। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে খবর। তবে প্রশাসনিক ভবন অনেকাংশেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। আগুন লাগা অংশে এক ব্যক্তি এখনও আটকে আছে বলে খবর।

জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎই আগুন লাগে সিরাম ইন্সস্টিটিউটের একটি অংশে। মুহূর্তেই সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আতঙ্ক ক্রমেই বাড়তে থাকে। তবে, আশার কথা হল, যে জায়গাটিতে ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, তার ধারেকাছেও পৌঁছতে পারেনি আগুন। বিরাট বড় এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে সিরাম ইন্সস্টিটিউট। তারই একটি অংশে আগুন লাগে। কিন্তু সেখান থেকে ভ্যাকসিন তৈরির জায়গা অনেকটাই দূরে। ফলে সেখানে আগুনের কোনও আঁচই এসে পড়েনি।

অপরদিকে, বুধবারই কলকাতায় এসে পৌঁছেছে করোনার টিকা কোভিশিল্ডের ৬৯,৯০০টি ভায়াল (৬.৯৯ লাখ ডোজ)। কিন্তু প্রথম দফার ৬৮,৯০০ ভায়াল নিয়ে টিকাকরণ কর্মসূচি শুরু করে রাজ্যে কিছুতেই গতি আসছে না টিকা দানে। শনিবার প্রথম দিন ১৫,৭০৭ জনকে টিকা দেওয়ার (টিকাকরণের হার ৭৬%) পর লক্ষ্য ছিল, হার বাড়ানো। কিন্তু সোমবার দ্বিতীয় দিনে (১৪,১১০ /৬৮.১৬%) ও মঙ্গলবার তৃতীয় দিনে (১৩,৬৯৩/৬৮.৪৭%) উত্তরোত্তর কমেছে টিকাকরণ। কো-উইন বিভ্রাট যার বড় কারণ।

পরিস্থিতি শুধরোতে মঙ্গলবার গুচ্ছ সিদ্ধান্তও নিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর। তার অন্যতম হল, লক্ষ্য ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার হলে তালিকা তৈরি করতে হবে ২০০ জনের। টিকাকরণের আগের দিন দুপুরের মধ্যে সেই সব নাম চূড়ান্ত করে আপলোড করতে হবে কো-উইন পোর্টালে। প্রতি সপ্তাহে কোন চার দিন টিকাকরণ হবে, তা ওই অ্যাপে তুলে ফেলতে হবে আগের সপ্তাহের শেষ দু’দিনে। অফলাইনে কিছু হবে না। স্থানীয় স্তরে নেতা-মন্ত্রী, বিশিষ্টদের অপরিকল্পিত ভাবে টিকাকরণ রুখতে এবং পুরো কর্মসূচিতে গতি আনতেই এমন সিদ্ধান্ত।

স্বাস্থ্যভবনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, কলকাতা-সহ সারা রাজ্যেই সরকারি ও বেসরকারি টিকাকরণ কেন্দ্রের সংখ্যা টিকাকরণ কর্মসূচির চতুর্থ দিন, শুক্রবার থেকে উত্তরোত্তর বাড়ানো হবে। কলকাতা পুরসভার আরবান হেলথ ক্লিনিকগুলিতেও চারটির বদলে বাড়ছে আরও পাঁচটি কেন্দ্র। এমন অবস্থায় আরও বেশি সংখ্যায় বিরূপ নজির প্রকাশ্যে আসতে বাধ্য। কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘তিন রকম প্রতিক্রিয়া হতে পারে— মাইনর, সিভিয়ার ও সিরিয়াস। মাইনর হলো, অত্যন্ত মামুলি সমস্যা যা বিনা চিকিৎসায় এমনিতেই সেরে যায়। সিভিয়ারের ক্ষেত্রে সামান্য চিকিৎসা দরকার পড়ে। আর সিরিয়াস হল যেখানে টিকা প্রাপককে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় এবং প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথম দু’টি নজর এড়িয়ে যায়। অথচ সেগুলি থেকেও বিপত্তি হতে পারে। সে জন্যই নিরন্তর নজরদারি দরকার। প্রতিটি ঘটনা রিপোর্ট হওয়া জরুরি।’ তিনি জানান, এ বার থেকে প্রতি বুধবার এই কমিটি বৈঠকে বসবে গত সপ্তাহের সব কেস পর্যালোচনা করতে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.