কোর্ট ভরতি দর্শক। সকলের মনে প্রশ্ন, এটাই কি শেষ ম্যাচ ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম মালকিনের? শেষ বারের মতো দেখা যাচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গ মেয়েটার শক্তিশালী সার্ভ? ২৩ বছর আগে ১৭ বছরের যে বাচ্চা মেয়েটা ইউএস ওপেন জিতেছিল, সেই মেয়েটাকে আর দেখা যাবে না এই কোর্টে লড়াই করতে? সেই সব প্রশ্নের উত্তর ৭-৬, ২-৬, ৬-২। আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামের দর্শককে অন্তত আরও এক বার তাঁকে দেখার সুযোগ করে দিলেন সেরিনা উইলিয়ামস।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময় সকালবেলা অ্যানেট কোন্টাভেইটকে ৭-৬, ২-৬, ৬-২ গেমে হারিয়ে দেন সেরিনা। ছ’বারের ইউএস ওপেন জয়ী জানিয়ে দিয়েছেন এটাই শেষ বার। বছরের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেলতে নামার আগেই অবসরের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু সেই দিনটা কবে? প্রথম রাউন্ডে তিনি যখন খেলতে নামছেন, তখন আবহে ক্যুইন লাতিফার ভিডিয়ো। কানায় কানায় ভর্তি আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে ছিল চাঁদের হাট। দর্শকাসনে ছিলেন মাইক টাইসন, মার্টিনা নাভ্রাতিলোভা, বিল ক্লিনটন, হিউ জ্যাকম্যানরা। এবং অবশ্যই মা ওরাসিন প্রাইস, মেয়ে অলিম্পিয়া, স্বামী অ্যালেক্সিস ওহানিয়ান। বিদায়ের মঞ্চ তৈরি করে রেখেছিলেন আয়োজকরা। কিন্তু টেনিস দেবতা বোধ হয় চাননি এত সহজে তাঁকে বিদায় দিতে। তাই প্রথম রাউন্ডে জিতলেন ৬-৩, ৬-৩ গেমে। জিতে নিলেন দ্বিতীয় রাউন্ডও। এ বার যদিও খুব বেশি আয়োজন ছিল না। ছিল সেরিনাকে নিয়ে তৈরি ছোট একটা ভিডিয়ো। সেটিতে শোনা যায় আমেরিকার বিখ্যাত সঞ্চালক ওপ্রা উইনফ্রির কণ্ঠস্বর। উইলিয়ামস বক্সে উপস্থিত ছিলেন টাইগার উডস।
তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে সেরিনা বলেন, “কোনও তাড়া নেই। এখনও কিছু দেওয়া বাকি আছে। আমি ভাল খেলোয়াড়। চ্যালেঞ্জ পছন্দ করি। তোমরা জান আমি সেরিনা। দ্বিতীয় সেট হেরে মনে হয়েছিল এই বোধ হয় সব শেষ হয়ে গেল। নিজেকে বোঝালাম যে সেরাটা দিতে হবে। এই সবই আমার কাছে বোনাস। নিজেকে আর প্রমাণ করার কিছু নেই। কিছু হারানোর নেই।”
সেরিনা বুঝিয়ে দিলেন তিনি শুধু অবসর নেওয়ার জন্য ইউএস ওপেনে নামেননি। তিনি খেলতে নেমেছেন। টেনিস কোর্টে র্যাকেট হাতে তিনি সেই লড়াইয়ে সহজে হার মানবেন না। মেয়েদের টেনিসকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া সেইনা জানেন, তাঁকে দেখে একাধিক প্রজন্ম অনুপ্রেরণা পায়। তাই সহজে লড়াই ছাড়তে রাজি নন তিনি।
তৃতীয় রাউন্ডে সেরিনা খেলবেন অস্ট্রেলিয়ার এজলা টমজানোভিচের বিরুদ্ধে। ২ সেপ্টেম্বর হবে সেই ম্যাচ।