ক্ষমতার পালাবদলের পরে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে আবার উদ্বেগ প্রকাশ করল ভারত। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অবস্থা উদ্বেগজনক। আশা করব সে দেশের সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেবে।’’
সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতারের পর বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ-সহ বিভিন্ন ধর্মের সংখ্যালঘুদের উপর মুসলিম কট্টরপন্থীদের ধারাবাহিক হামলার অভিযোগ উঠছে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশের হাতে সন্ন্যাসীর গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, ‘‘আশা করব চিন্ময়কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগের স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ বিচার হবে। তাঁর আইনি অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকবে।’’ তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য বন্ধ হবে না বলে জানান তিনি।
গত ৫ অগস্ট জনবিক্ষোভের জেরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে এসেছিলেন আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতেই রয়েছেন। অন্য দিকে, বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে নয়াদিল্লির সম্পর্ক নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা সংশয়। সে দেশে ধারাবাহিক ভাবে হিন্দুদের বসতি এবং মন্দিরে হামলার ঘটনাও ঘটছে।
এই আবহে বৃহস্পতিবার বিদেশ প্রতিমন্ত্রী কীর্তিবর্ধন সিংহ সংসদে বিবৃতিতে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘বিগত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন হিন্দু মন্দির এবং বিগ্রহের উপর হামলা এবং ভাঙচুরের রিপোর্ট আসছে। ভারত সরকার এই ধরনের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তার মধ্যে রয়েছে এই বছরের দুর্গাপুজো চলাকালীন ঢাকার তাঁতিবাজারের মণ্ডপে আক্রমণ, সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালীমন্দিরে ডাকাতির মতো ঘটনা। বাংলাদেশ সরকারকে ভারত বলতে চায়, তারা সে দেশে বসবাসকারী হিন্দু এবং সমস্ত সংখ্যালঘু মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুক এবং তাদের প্রার্থনার জায়গা নিরাপদ রাখুক।’’ এ বার সংখ্যালঘু নিপীড়ন নিয়ে ঢাকাকে বার্তা দিল বিদেশ মন্ত্রক।