এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি হকিতে চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। মঙ্গলবার ফাইনালে চিনকে ১-০ ব্যবধানে হারালেন হরমনপ্রীত সিংহেরা। তবে প্রতিযোগিতার বাকি ম্যাচগুলির মতো সহজ জয় এল না খেতাবের লড়াইয়ে। এই নিয়ে পঞ্চম বার চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন হরমনপ্রীত।
সেমিফাইনালে পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম বার প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠা চিন প্রথম থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিল। রক্ষণ সামলে আক্রমণের কৌশল নিয়ে মাঠে নামে চিন। ভারতীয় কোনও খেলোয়াড় ‘ডি’র মধ্যে ঢুকলেই তিন-চার জন মিলে ঘিরে ধরার চেষ্টা করেছেন। শট মারার জায়গা দেননি হরমনপ্রীতদের। বার বার আক্রমণে উঠেও গোল করার সুযোগ তৈরি করতে পারেননি প্যারিস অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জজয়ীরা। ৫০ মিনিট পর্যন্ত গোল করতে পারেনি কোনও দলই। ৫১ মিনিটে ভেঙে গেল চিনের প্রাচীর। যুগরাজ সিংহ এগিয়ে দেন ভারতকে।
ভারতীয় দল প্রথম থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ছিল। তবু চিনের জমাট রক্ষণের সামনে বার বার নির্বিষ হয়ে যায় ভারতীয় দলের আক্রমণগুলি। তার মধ্যে গোলের সুযোগ আসেনি তা নয়। কয়েকটি সহজ সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি হরমনপ্রীতেরা। প্রথম দু’কোয়ার্টারে ৮৪ শতাংশ সময় বলের দখল ছিল ভারতীয় দলেরই। তবু গোলের দরজা খুলতে বেশ পরিশ্রম করতে হল ভারতীয় দলকে। একাধিক পেনাল্টি কর্নার কাজে ব্যর্থ হন অধিনায়ক হরমনপ্রীতও।
একের পর এক সুযোগ নষ্টের ফলে ভারতীয় শিবিরে চাপ তৈরি হয়। বিশেষ করে তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত (৪৫ মিনিট) গোল না হওয়ায় চতুর্থ কোয়ার্টারে আক্রমণের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করেন হরমনপ্রীতেরা। এ সময় চিনের খেলোয়াড়েরা সম্পূর্ণ রক্ষণাত্মক হয়ে যান। চিনের সব খেলোয়াড়ই নিজেদের অর্ধে নেমে গিয়েছিলেন। ‘ডি’র মধ্যে পায়ের জঙ্গল তৈরি করে রেখেছিলেন। সম্ভবত তাঁদের লক্ষ্য ছিল, ম্যাচ টাইব্রেকার পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া। সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই রণকৌশল সাফল্য দিয়েছিল তাঁদের।
ভারত অবশ্য হাল ছাড়েনি। গোল না পাওয়ার হতাশা থাকলেও চেষ্টার খামতি ছিল না জারমানপ্রীত সিংহ, গুরজ্যোৎ সিংহদের। একের পর এক আক্রমণ তৈরির চেষ্টা করে গিয়েছেন তাঁরা। দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখল অধিকাংশ সময় ছিল চিনের দখলে। তাতে অবশ্য সমস্যা হয়নি। গোটা ম্যাচে সতর্ক ছিল ভারতীয় দলের রক্ষণ। গোলরক্ষক কিশন পাঠান একাধিকবার দলকে বিপন্মুক্ত করেছেন। ২৭ মিনিটে ভারত একটি পেনাল্টি স্ট্রোক পায়। ‘ডি’র মধ্যে চিনের গোলরক্ষক ফাউল করেন মনপ্রীত সিংহকে। মাঠের আম্পায়ার পেনাল্টি দিলে চিন রিভিউ নেয়। ভিডিয়ো আম্পায়ার পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেন। অন্য দিকে, দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-২ ব্যবধানে হারিয়ে তৃতীয় হয়েছে পাকিস্তান।