ভোটের বাদ্যি রাজ্যে, চলতি সপ্তাহে কলকাতায় আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

ভোটের বাদ্যি বেজেছে বাংলায়। ইতিমধ্যে রাজ্যের বেশকিছু জেলায় এসে পড়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই সপ্তাহেই কলকাতায় আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আপাতত তিন কোম্পানি এসএসবি আসছে শহরে। তার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে লালবাজার। সোমবার লালবাজারের এক কর্তা জানান, ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁচচ্ছে কলকাতায়। এবার শহরজুড়ে শুরু হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ। একেকটি কোম্পানিতে রয়েছে আট বা ন’টি করে সেকশন। সেই অনুযায়ী ২৪ থেকে ২৭টি সেকশন থাকছে মোট তিনটি কোম্পানিতে।

এদিনই দক্ষিণ কলকাতায় উদ্বোধন হয় নতুন থানা ‘গল্ফগ্রিন’। যাদবপুর থানা ভেঙে হয়েছে এই নতুন থানা। সেই ক্ষেত্রে এখন কলকাতায় রয়েছে মোট ৭২টি থানা। সেইমতো একেকটি থানায় একেকটি সেকশন কেন্দ্রীয় বাহিনী আপাতত রুট মার্চ করবে। একেকটি সেকশনে থাকছেন আট থেকে দশজন করে অফিসার ও জওয়ান। ভোটের আগে অঞ্চল আধিপত্য অথবা ‘এরিয়া ডমিনেশন’এর জন্য রুট মার্চ করবেন এসএসবির জওয়ানরা। এ ছাড়াও শহরের কোথাও রাজনৈতিক সংঘর্ষের খবর পেলেও পুলিশের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী পৌঁছতে পারে ঘটনাস্থলে। সূত্রের খবর, এখন তিন কোম্পানি এলেও ধীরে ধীরে আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী শহরে আসতে পারে। শতাধিক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসতে পারে কলকাতায়। সেই ক্ষেত্রে একেকটি থানা এলাকায় অন্তত এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী ‘এরিয়া ডমিনেশন’ করতে পারে।

কেন্দ্রীয় বাহিনীর থাকারও ব্যবস্থা করছে কলকাতা পুলিশ। আপাতত এই তিন কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীকে হেস্টিংসের পুলিশ ট্রেনিং স্কুল ও দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে কোম্পানির কম্যান্ডান্ট ও পদস্থ কর্তাদের জন্য হোটেলের ঘরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সংখ্যা বাড়লে প্রথমদিকে তাদের কলকাতা পুলিশের অন্যান্য ব্যাটালিয়নে থাকার ব্যবস্থা হবে। তবে ধীরে ধীরে বাহিনীর জওয়ানদের থাকার ব্যবস্থা হবে কলকাতার কয়েকটি স্কুলে। তার জন্য কলকাতা পুলিশের থানাগুলিকে লালবাজারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিজেদের এলাকার স্কুল বেছে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে। স্কুলগুলির বাথরুমের অবস্থা কী রকম, তা পুলিশকেই খতিয়ে দেখতে হবে। স্কুলে যেন পর্যাপ্ত জল ও আলো থাকে, তা দেখতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও স্কুল চত্বরে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য রান্নাঘর ও স্টোররুম তৈরি করা যায়, সেদিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। সম্প্রতি ১৩টি পুলিশের বাসের উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার। সেই বাসগুলি ভোটের আগে ও ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী ও কলকাতার পুলিশের বাহিনীকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাতায়াত করবে।

লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত অজামিনযোগ্য পরোয়ানা রয়েছে যাদের বিরুদ্ধে, এমন প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনকে এখনও গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য তল্লাশি চালাচ্ছে শহরের থানা ও গোয়েন্দা বিভাগ। পলাতকদের অনেকেই ভিনরাজ্যে ও বেনামে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও ভোটের আগে রাজনৈতিক সংঘর্ষ কমাতেও তৎপর পুলিশ। সম্প্রতি নারকেলডাঙা ও বেলেঘাটায় ঘটেছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। এ ছাড়াও ভোটের আগে দাগি দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের উপরও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.