ইরান এবং পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব নিয়ে এ বার মুখ খুললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। তবে পাশাপাশি ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ বাধলে আমেরিকা কোন দিকে ঝুঁকবে, তার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ইরান-পাকিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে বাইডেন বলেন, ‘‘শান্তি বজায় রাখতে হবে। বুঝতেই পারছেন, ওই এলাকায় ইরানকে কেউ খুব একটা পছন্দ করে না। এই সংঘর্ষই তার প্রমাণ। আমরা দেখছি কী করা যায়। তবে কী হতে চলেছে, বলা যাচ্ছে না।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফেও ইরান এবং পাকিস্তান— উভয় পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার এবং সংযমের অনুরোধ করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। তেহরান জানায়, হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি। ইরানের দাবি, এই জঙ্গি সংগঠন তাদের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে। কিন্তু ইরানের হামলার পরপরই গর্জে ওঠে ইসলামাবাদ। তারা বৃহস্পতিবার ইরানে পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তানের হামলায় ইরানে অন্তত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি। বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি পাক হামলায় নিহতদের ‘নিজের লোক’ বলে দাবি করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে ফেলেছে।
পাক হামলাকে ভাল চোখে দেখেনি ইরানও। তাদের বিদেশ মন্ত্রক বৃহস্পতিবারই তেহরানে পাকিস্তানের সবচেয়ে সিনিয়র কূটনীতিককে তলব করেছে এবং তাঁর কাছ থেকে পাক হামলার কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।
বস্তুত, ইরানের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক কোনও দিনই মসৃণ নয়। সম্প্রতি পশ্চিম এশিয়ায় ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধের আবহে সেই সম্পর্কে তিক্ততা আরও বেড়েছে। যুদ্ধে প্রথম থেকেই ইজ়রায়েলের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছে আমেরিকা। অন্য দিকে, ইরান আবার প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সাহায্য করেছে। প্রকাশ্যে প্যালেস্টাইনের পাশেও দাঁড়িয়েছে তেহরান। এর মাঝে পাকিস্তানে ইরানের হামলা এবং তার ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে আমেরিকার বার্তা দ্বন্দ্বে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।