তৃতীয় দফার ভোটে দিনভর বিক্ষিপ্ত অশান্তি হলেও দিনের শেষে নির্বাচন কমিশন দাবি করল ভোট শান্তিপূর্ণ। ৩১টি আসনে নির্বাচন ছিল মঙ্গলবার। সেখানে তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইভিএম বাজেয়াপ্ত থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের ৬ জন প্রার্থী আহত হওয়া, এমনকি মহিলা প্রার্থীকে হেনস্থা করার অভিযোগও উঠেছে। প্রতিটি ঘটনায় যথাযথ এবং দ্রুত পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব।
মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, এই দফায় মোট ২০৫ জন প্রার্থী ছিলেন। যাঁদের মধ্যে ১৯২ জন পুরুষ প্রার্থী এবং ১৩ জন মহিলা প্রার্থী ছিলেন। এই দফায় মোট ৩৮ জন পর্যবেক্ষক ছিলেন। যার মধ্যে ২২ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক, ৭ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক এবং ৯ জন ব্যয় পর্যবেক্ষক। মোট ১০ হাজার ৮৭১টি ভোটকেন্দ্র ছিল। ৫ হাজার ৫০৭ বুথে ওয়েবকাস্টিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। ১ হাজার ৬৯৪ বুথে সিসিটিভি ছিল। এ ছাড়াও ৯১৪ বুথে মাইক্রো অবজার্ভার ছিলেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৭৭.৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, এই দফায় মোট অভিযোগ জমা পড়েছে ১ হাজার ৮০২টি। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, উলুবেড়িয়া উত্তরের তুলসীবেড়িয়ায় ৩টি ইভিএম এবং ৪টে ভিভিপ্যাট এক ব্যক্তির বাড়িতে পাওয়া যায়। তার পরই সেক্টর অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আরও ২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্টর অফিসারকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। সেকশন পুলিশ অফিসারকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবং ৩ জন হোমগার্ডকে কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। যে ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট উদ্ধার হয়েছে সেগুলো উলুবেড়িয়ার ২ বিডিও অফিসে ভিডিয়োগ্রাফ-সহ সাধারণ পর্যবেক্ষকের উপস্থিতিতে সেখানে রাখা হয়েছে। সমস্ত প্রার্থীকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট ভোটের কাজে ব্যবহার করা হবে না ।
খানাকুলের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরামবাগের ঘটনায় ৫ জন এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই তিন জায়গার ঘটনা থেকে। সিইও আরও জানান, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের মহিলা ভোটারকে বাধা দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে বলেও মঙ্গলবার জানিয়েছে কমিশন।
মঙ্গলবার সকালে আরামবাগের আরাণ্ডির মহল্লাপাড়ায় একটি বুথ থেকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল খাঁ। অভিযোগ, সেখানে তাঁকে হেনস্থা করা হয় এমনকি আরও একটি বুথে গেলে তাঁর মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। অন্য দিকে, হাওড়ার উলুবেড়িয়া উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী নির্মল মাজি উপর হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া অধিকারীর উপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাঁকে চড় মারার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে। গোঘাটে তৃণমূলের এক বুথ সভাপতিকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি-র বিরুদ্ধে। গুরুতর চোট পেয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। যদিও ধাক্কা মারার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।