আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্নে যাওয়ার ডাক দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ এবং সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কিন্তু পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অনুমতি ছাড়াই ওই অভিযান হচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে পুরো হাওড়াতেই জোরদার করা হচ্ছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সোমবার বিকেলে হাওড়ার শরৎ সদনে উচ্চ পর্যায়ের জরুরি বৈঠক হয় পুলিশের। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য ও হাওড়া পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা। তা ছাড়াও ছিলেন মঙ্গলবার নিরাপত্তা এবং টহলদারির দায়িত্ব রয়েছে যে পুলিশ আধিকারিকদের উপর, তাঁরা। পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার একাধিক জায়গায় বড় ব্যারিকেড তৈরির পাশাপাশি নামানো হচ্ছে পুলিশ, র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্স। সাঁতরাগাছি, হাওড়া ময়দান, ফরশোর রোড এবং লক্ষ্মীনারায়ণতলা এবং মন্দিরতলায় বড় ব্যারিকেড তৈরি করা হচ্ছে। নবান্নের আশপাশে গলির মুখগুলোও ঘিরেও ফেলা হচ্ছে ব্যারিকেড দিয়ে। থাকছে জলকামান এবং ড্রোনের ব্যবস্থা।
বৈঠকের পর পুলিশ সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার হাওড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখভালের জন্য চার জন আইজি র্যাঙ্কের পুলিশ অফিসার ছাড়াও ডিআইজি এবং এসপি পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকেরা থাকবেন। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ২,১০০ পুলিশকর্মীকে রাস্তায় নামানো হবে। সে জন্য হাওড়া ছাড়াও কলকাতা-সহ বিভিন্ন পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশকর্মীরা আসছেন হাওড়ায়। সোমবার সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ব্যারিকেড তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এ ছাড়াও বেলেপোল ক্রসিং ঘিরে ফেলা হচ্ছে গার্ড রেল দিয়ে। হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা সেই ব্যারিকেড তৈরির কাজ দেখভাল করছেন।
উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’। ওই অভিযানে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছে রাজ্যের শাসকদল। সোমবার দু’টি ‘গোপন’ ভিডিয়ো প্রকাশ করে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং তৃণমূলনেতা কুণাল ঘোষ দাবি করেছিলেন, নবান্ন অভিযানে গুলি চালানো হতে পারে। এমনকি, রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য নবান্ন অভিযানে খুনও করা হতে পারে বলে অভিযোগ করেছিলেন কুণালেরা। পরে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘নবান্নের ওই অভিযানে মহিলা এবং ছাত্রদের সামনে রেখে পিছন থেকে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে বলে খবর পেয়েছি আমরা। পুলিশকে বলপ্রয়োগে উস্কানি দিতেই এটা করা হবে।’’ কারা এ কাজ করছে তা স্পষ্ট না করলেও তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর রয়েছে, নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া ছাত্র সমাজের এক প্রতিনিধি রবিবারই কলকাতার এক বিলাসবহুল হোটেলে গিয়ে এক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করেছেন।’’