দিমি-তালাল জুটিতে বাজিমাত, আইএসএলে অষ্টম ম‍্যাচে প্রথম জয় ইস্টবেঙ্গলের, থাকল চিন্তাও

অষ্টম ম্যাচ খেলতে নেমে আইএসএলে প্রথম জয় পেল ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার ঘরের মাঠে নর্থইস্ট ইউনাইটেডকে ১-০ গোলে হারাল তারা। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করলেন দিমিত্রিয়স দিয়ামানতাকোস। গোলের পাস বাড়ালেন মাধি তালাল। এই ম্যাচের পরেও অবশ্য ইস্টবেঙ্গল পয়েন্ট তালিকায় সবার শেষে থাকল। আট ম্যাচে চার পয়েন্ট হল তাদের।

গুরমিতের গোলকিপিং

তিন মিনিটের মধ্যেই দু’গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয় মিনিটেই ডান দিক থেকে ক্রস ভাসিয়েছিলেন জিকসন সিংহ। সেই বলে পা ছুঁইয়েছিলেন পিভি বিষ্ণু। কোনও মতে পা দিয়ে সেই প্রচেষ্টা আটকে দেন গুরমিত সিংহ। পরের মিনিটেই নর্থইস্টের বক্সের ঠিক বাইরে ফ্রিকিক পায় ইস্টবেঙ্গল। মাধি তালালের শট এক হাত দিয়ে বাঁচান গুরমিত। মিনিট দশেক পরে আবার বিষ্ণুর একটি প্রয়াস বাঁচিয়ে দেন তিনি। শুধু এটাই নয়। গোটা ম্যাচে একাধিক বার ইস্টবেঙ্গলের প্রয়াস রুখেছেন। না হলে শেষ বাঁশি বাজার অনেক আগেই জেতার কথা ইস্টবেঙ্গলের।

দিমিত্রিয়স-তালাল জুটি

এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে ইস্টবেঙ্গলের সাফল্যের নেপথ্যে ছিল দিয়ামানতাকোস এবং তালালের বোঝাপড়া। মহমেডান ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ৩০ মিনিটেই ন’জন হয়ে যাওয়ায় সেই জুটির প্রভাব দেখা যায়নি। নর্থইস্ট ম্যাচে আবার তা ফিরল। ইস্টবেঙ্গলের গোলের নেপথ্যে রয়েছে এই জুটিই। দিয়ামানতাকোসের শট নর্থইস্টের ফুটবলারের গায়ে লেগে বাঁ প্রান্তে থাকা তালালের কাছে যায়। তালাল বল ধরতেই গোলের কাছে ছুটে গিয়েছিলেন দিয়ামানতাকোস। নিখুঁত ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন তিনি। জুটির সাফল্যের কারণ, তালাল বল পেলেই দিয়ামানতাকোস বুঝে যাচ্ছেন কোথায় পজিশন নিতে হবে। সেখানে পৌঁছে যাচ্ছেন দ্রুত। এর পর গোলে বল ঢোকাতে অসুবিধা হচ্ছে না।

ইস্টবেঙ্গলের আগ্রাসন

আইএসএলের প্রথম চারটি ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে দেখে মনে হয়েছিল গুটিয়ে থাকা, মানসিকতা দুমড়ে যাওয়া একটি দল। অস্কার ব্রুজ়ো দায়িত্ব নেওয়ার পর তা বেশ কিছুটা বদলে দিয়েছিলেন। নর্থইস্ট ম্যাচে আবারও ইস্টবেঙ্গলের আগ্রাসন লক্ষ করা গেল। ইস্টবেঙ্গল আক্রমণ করতে কখনও পিছপা হয়নি। বারে বারে নর্থইস্ট বক্সে হানা দিয়েছে। বিপক্ষকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে। চাপে পড়ে প্রচুর ফাউল করেছেন নর্থইস্টের ডিফেন্ডারেরা। মহম্মদ আলি বেমামেরকে লাল কার্ডও দেখতে হয়েছে।

বিষ্ণুর গতি

ম্যাচের আগের দিন সাংবাদিক বৈঠকে ব্রুজ়‌ো জানিয়েছিলেন, বিষ্ণু যে কোনও দিন শিরোনাম কেড়ে নিতে পারেন। কেরলের তরুণ ফুটবলার সত্যিই নজর কাড়লেন নর্থইস্ট ম্যাচে। বাঁ দিক থেকে তাঁর গতি বার বার বিপদে ফেলল নর্থইস্টকে। তাঁকে আটকাতে গিয়ে একাধিক ফাউল করলেন ডিফেন্ডারেরা। রেফারি ঠিকঠাক বিচার করলে পেনাল্টিও পেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। তবে বল নিয়ন্ত্রণ এবং পাসিংয়ের ব্যাপারে আরও সাবধানি হতে হবে বিষ্ণুকে। অনেক সময়েই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে পা থেকে বল হারিয়ে ফেলছেন তিনি।

লাল-হলুদের রক্ষণ ও ফিটনেস

ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ এবং ফিটনেস নিয়ে চিন্তা এই ম্যাচেও কাটল না। এটা ঠিক যে আলাদিন, রেগ্রাগুই, আলবিয়াচকে আটকে দিয়েছেন ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারেরা। তবে নর্থইস্টের ভাগ্যও সঙ্গ দেয়নি। আলাদিনের একটি শট পোস্টে লেগেছে। আরও কিছু সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন তিনি। জিতিনকেও স্বাভাবিক ছন্দে পাওয়া যায়নি। আনোয়ার আলি ভাল খেলেছেন। তাঁর সঙ্গে হেক্টর ইয়ুস্তের বোঝাপড়াও ভাল ছিল। তবে জিকসনকে নিয়ে ভাবতে হবে ব্রুজ়োকে। বিরতির কিছু পরেই জিকসন একটা লম্বা দৌড়ের পর যে ভাবে হতোদ্যম হয়ে পড়লেন তাতে তাঁর ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.