কাজের প্রতি দায়িত্বশীল নন পুলিশকর্মীরা। তাঁদের কাজে কোনও গতি নেই। এ রকম চলতে থাকলে তা একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না বলে বিধাননগর পুলিশকে কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাই কোর্ট। পুলিশের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে উচ্চ আদালত।
শুক্রবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘‘বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের সব থানায় গোলমেলে অবস্থা! ওই সব থানায় তদন্ত করার মতো অবস্থা রয়েছে কি না, আদালতের সন্দেহ আছে। পুলিশকর্মীদের কাজ চোখে পড়ছে না। পুলিশের চাকরি করছেন অথচ তার প্রতি দায়িত্বশীল নন। এটা চলতে পারে না।’’ আদালতের হুঁশিয়ারি, পুলিশের কাজে গতি না এলে তা একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। এ রকম চলতে থাকলে ভবিষ্যতের পদক্ষেপের জন্য তৈরি থাকতে হবে। আদালতের পরামর্শ, চাকরি করলে তার প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে হবে। বেতন পেলে কাজ করতে হবে!
লেকটাউন থানা এলাকায় তাঁর জমির দলিল জাল করা হয়েছে এই অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেছেন এক জন। মামলাকারীর বক্তব্য, প্রথমে পুলিশ জানিয়েছিল, দলিল জাল করা হয়নি। পরে ওই দলিল যাচাই করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানান, সেটি সঠিক নয়। জাল করে ভুয়ো দলিল তৈরি করা হয়েছে। ওই মামলায় সিআইডি তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। শুক্রবারের শুনানিতে ওই মামলায় পুলিশের রিপোর্ট দেখে থানার ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে হাই কোর্ট। বিচারপতি ঘোষের মন্তব্য, ‘‘সিআইডিকে তদন্ত দিলে সিবিআইয়ের মতো হবে। তদের কাছ থেকে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আশা করা যায় না। পুলিশকে পুলিশের কাজ করতে হবে।’’
আদালতের প্রাথমিক অনুমান, জমির দলিল জাল করার বিষয়টি পুলিশ সঠিক ভাবে তদন্ত না করেই রিপোর্ট দিয়েছে। বিচারপতি ঘোষ প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন পুলিশ তদন্ত করতে পারবে না? তাদের কি সেই পরিকাঠামো নেই? পুলিশের সর্বত্র প্রায় একই অবস্থা। পকসোর মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে প্রচুর অসঙ্গতি দেখা যায়।’’ সব অভিযোগের তদন্ত পুলিশকেই করতে বলে মামলার নিষ্পত্তিও করে দিয়েছে হাই কোর্ট।