দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে উত্তর দিনাজপুরে গ্রেফতার আল-ফালাহ্‌র ডাক্তারি ছাত্র! পৈতৃক ভিটেয় এসেছিলেন বিয়ের অনুষ্ঠানে

দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় উত্তর দিনাজপুরের সূর্যাপুর বাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হল এক মেডিক্যাল ছাত্রকে। ধৃত যুবকের নাম নিশার আলম। তিনি হরিয়ানার আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিবিএসের ছাত্র। শুক্রবার ভোরে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)-র বিশেষ দল সূর্যাপুর বাজার চত্বর থেকে তাঁকে আটক করে।

পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিশারের বাড়ি লুধিয়ানায় হলেও তাঁর পৈতৃক ভিটে উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা থানার কোনাল গ্রামে। ধৃতের বাবা তৌহিদ আলম কর্মসূত্রে কয়েক দশক আগে লুধিয়ানায় গিয়ে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। তবে পরিবারটির সঙ্গে কোনালের আত্মীয়দের যোগাযোগ এখনও রয়েছে। দু’দিন আগে এক আত্মীয়ের বিয়েতে যোগ দিতে মা ও বোনকে নিয়ে কোনালে যান নিসার। তার মাঝেই শুক্রবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

এনআইএর একটি সূত্র বলছে, বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা লুধিয়ানায় তৌহিদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকেই জানা যায় যে, নিশার বর্তমানে উত্তর দিনাজপুরে রয়েছেন। এর পরেই তদন্তকারী দল দ্রুত উত্তরবঙ্গে যায়। বৃহস্পতিবার গভীর রাতেই সূর্যাপুরের উদ্দেশে রওনা দেন তদন্তকারীরা। শুক্রবার ভোরে এলাকায় তাঁরা অভিযান চালান।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, নিশারের মোবাইলের লোকেশন দেখে তাঁকে ট্র্যাক করা সম্ভব হয়। তাঁর মোবাইল সিগন্যাল দেখায়, তিনি সূর্যাপুর বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছেন। সেই মতো এনআইএ দল সেখানে যায়। পরে তাঁকে আটক করে প্রথমে ইসলামপুরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং আরও জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে তাকে শিলিগুড়িতে স্থানান্তর করা হয় বলে পরিবার সূত্রে খবর।

অন্য দিকে, এই ঘটনায় হতবাক ধৃতের পরিবার। নিশারের কাকা আবুল কাশেম বলেন, “ভাইপোকে আমরা খুবই শান্ত ও ভদ্র ছেলে হিসেবে চিনি। সে পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোনও বিষয়ে মাথা ঘামায় না।” তিনি জানান, বিস্ফোরণ তদন্তে এনআইএ সম্ভবত ছাত্রটির সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সেই সূত্র ধরে নিশারকেও গ্রেফতার করা হয়ে থাকতে পারে।

ফোনে নিশারের মায়ের কাছে তাঁর আটক হওয়ার খবর পৌঁছোতেই বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের দাবি, নিশার কোনও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত রয়েছে বলে তারা কখনও শোনেনি। তারা আশা করছে, তদন্তের মাধ্যমে সত্য সামনে আসবে।

গ্রেফতারির ঘটনায় কোনাল গ্রামেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গ্রামবাসীরা বলছেন, নিশার শান্ত, ভদ্র এবং শিক্ষিত পরিবারের ছেলে। বিস্ফোরণের সঙ্গে তাঁর নাম জড়ানোয় তাঁরা অবাক। বিস্ফোরণকাণ্ডে ধৃত তিন চিকিৎসকের কোনও না-কোনও ভাবে যোগ রয়েছে হরিয়ানার ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে। এ বার সেখানকার ছাত্র নিসারকে গ্রেফতার করা হল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.